সামিল হন ‘অপারেশন সিঁদুরে’, বায়ুসেনার ওই মহিলা যোদ্ধাকে এখনই কাজ থেকে সরানো যাবে না! কেন্দ্রকে বলল সুপ্রিম কোর্ট

‘অপারেশন সিঁদুর’-এ সামিল থাকা ছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার এক মহিলা আধিকারিক। তাঁকে এখনই কাজ থেকে সরানো যাবে না বলে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বায়ুসেনাকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, বায়ুসেনার ওই মহিলা আধিকারিক শুধু ‘অপারেশন সিঁদুর’ই নয়, ‘অপারেশন বালাকোট’-এও সামিল ছিলেন।

ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার নিকিতা পাণ্ডে বাহিনীতে স্থায়ী কমিশনের দাবিতে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। উইং কমান্ডারের দাবি, স্বল্পমেয়াদি কমিশনের পরে তাঁর স্থায়ী কমিশনের আবেদন নাকচ হয়ে গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বৈষম্য হয়েছে বলে দাবি করছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। সেখানে কেন্দ্র এবং বায়ুসেনার থেকে জবাব তলব করেছে আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনা একটি পেশাদার বাহিনী এবং কাজে অনিশ্চয়তা এই আধিকারিকদের জন্য মোটেই ভাল বিষয় নয়।

বিচারপতি কান্ত বলেন, “আমাদের বায়ুসেনা বাহিনী বিশ্বের অন্যতম সেরা বাহিনী। অফিসারদের ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয়। পরস্পরের মধ্যে সমন্বয়ের যে মান তার তুলে ধরেছেন, তা অতুলনীয়। আমরা সবসময় তাঁদের কুর্নিশ জানাই। তারা দেশের বড় সম্পদ। এক অর্থে বলতে গেলে, তাঁরাই হলেন দেশ। তাঁদের জন্যই আমরা রাতে ঘুমোতে পারি।” আদালত জানিয়েছে, স্বল্পমেয়াদি কমিশনে নিয়োগ পর অফিসারদের জন্য একটি ‘কঠিন জীবন’ শুরু হয়। বিচারপতি কান্ত বলেন, “মনের মধ্যে এই ধরনের অনিশ্চয়তা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ভাল না-ও হতে পারে। আমরা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নই, তবে সাধারণ মানুষ হিসাবে একটি পরামর্শ দিতে চাই। এ ক্ষেত্রে একটি ন্যূনতম মাপকাঠি থাকা উচিত, যেখানে কোনও আপস হবে না।”

মামলাকারী বায়ুসেনা আধিকারিকের তরফে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মেনকা গুরুস্বামী। আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল একজন অভিজ্ঞ ফাইটার কন্ট্রোলার। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং ‘অপারেশন বালাকোট’-এর সময় যে ইন্টিগ্রেটেড এয়ার কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম্‌স (আইএসিসিএস) মোতায়েন করা হয়েছিল, ওই বায়ুসেনা আধিকারিক তাতে সামিল ছিলেন।

মামলার শুনানিতে কেন্দ্র এবং বায়ুসেনার তরফে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি। ওই মহিলা আধিকারিক কেন স্থায়ী কমিশন পাচ্ছেন না, তা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের কাছে জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। ভাটি জানান, ওই আধিকারিক সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। বাছাই সংক্রান্ত দ্বিতীয় একটি বোর্ড বিষয়টি বিবেচনা করবে বলেও আদালতে জানান ভাটি। সে ক্ষেত্রে আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বায়ুসেনার ওই মহিলা আধিকারিককে কাজ থেকে সরানো যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ৬ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.