রবিবারের ফাইনাল সহজ হবে না ভারতের, নিউ জ়িল্যান্ডের তিন শক্তি চিন্তায় রাখবে রোহিতদের

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিতেছিল ভারত। ফাইনালে আবার মুখোমুখি দুই দল। কিন্তু এ বারের লড়াই খুব সহজ হবে না রোহিত শর্মাদের জন্য। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সেই গভীরতা নেই, যা নিউ জ়িল্যান্ডের রয়েছে। কোন কোন কারণে কিউয়িরা শক্তিশালী দল? তাদের দুর্বলতা কোথায়?

স্পিন আক্রমণ

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আট দলের মধ্যে ভারতীয় দলের স্পিন আক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ক্ষমতা শুধু নিউ জ়িল্যান্ডের রয়েছে। সেই দলের অধিনায়ক বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার। সেই সঙ্গে রয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল, গ্লেন ফিলিপ্স এবং রাচিন রবীন্দ্র। নিউ জ়িল্যান্ডের স্পিন আক্রমণে বৈচিত্র রয়েছে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে যদিও ভারত সেই আক্রমণ ভাল ভাবেই সামলেছিল। তবে ফাইনালে খেলতে নামার আগে আরও তৈরি হয়ে নামবেন স্যান্টনারেরা। আর ফাইনালটি হবে সেই পিচে যেখানে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল। ফলে স্পিনারেরা যে সাহায্য পাবেন তা বলাই যায়। ফলে ভারতকে এই বিভাগে সমানে সমানে টক্কর দিতে পারেন স্যান্টনারেরা।

ফিল্ডিং

এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফিল্ডিংয়ে সবচেয়ে বেশি দক্ষতা দেখিয়েছে নিউ জ়িল্যান্ড। গ্লেন ফিলিপ্স যেমন কিছু অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিয়েছেন, তেমনই রান বাঁচিয়েছেন বাকি ফিল্ডারেরা। যা বিপক্ষের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করে দেয়। গত ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০-৪০ রান ফিল্ডিংয়ে বাঁচিয়ে ছিল নিউ জ়িল্যান্ড। শুধু ফিলিপ্স নন, স্যান্টনার, উইল ইয়ং এবং ব্রেসওয়েলও ফিল্ডার হিসাবে যথেষ্ট ভাল। ভারতীয় ব্যাটারদের শুধু নিউ জ়িল্যান্ডের বোলারদের নিয়ে ভাবলে হবে না, ফিল্ডারদের দিকেও নজর রাখতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ৩০-৪০ রান বাঁচিয়ে দিলে চাপ তৈরি হয়ে যাবে যে কোনও দলের। বিরাট কোহলি সিঙ্গলস নিয়ে ইনিংস গড়তে পছন্দ করেন। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেই কাজটাই কঠিন হয়ে যাবে। কারণ কিউয়ি ফিল্ডারেরা এত দ্রুত বল ফেরত পাঠিয়ে দেন যে, রান আউট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সেটা চাপ তৈরি করে দিতে পারে ভারতের উপর।

ব্যাটিং গভীরতা

ভারতীয় দলে আট নম্বরে ব্যাট করতে নামেন রবীন্দ্র জাডেজা। একটা দলের ব্যাটিং গভীরতা বোঝানোর জন্য এই একটা তথ্যই যথেষ্ট। কিন্তু কম যায় না নিউ জ়িল্যান্ডও। সেই দলের টপ অর্ডারে রাচিন রবীন্দ্র, উইল ইয়ং এবং কেন উইলিয়ামসন রয়েছেন। তাঁরা যেমন দ্রুত রান তুলতে পারেন, তেমনই প্রয়োজনে জুটি গড়তে পারেন। বুধবার যেমন উইং আউট হওয়ার পর রাচিন এবং উইলিয়ামসন শতরান করলেন। মিডল অর্ডারকে দ্রুত রান তোলার ভিত গড়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। নিউ জ়িল্যান্ডের মিডল অর্ডারে খেলেন টম লাথাম, ড্যারিল মিচেল এবং গ্লেন ফিলিপ্স। তাঁরা স্পিন খেলতে যথেষ্ট পারদর্শী। ফলে ভারতীয় স্পিনারেরা তাঁদের বিরুদ্ধে খুব স্বস্তিতে বল করবেন, সেটা না-ও হতে পারে। গ্রুপ পর্বে কিউয়িদের সমস্যায় ফেলে দিয়েছিলেন বরুণ চক্রবর্তী। ফাইনালে তাঁর জন্য তৈরি হয়েই নামবেন উইলিয়ামসনেরা।

দুর্বলতা

নিউ জ়িল্যান্ড ফাইনালে ম্যাট হেনরিকে না-ও পেতে পারে। পুরো প্রতিযোগিতা তিনি দলের পেস আক্রমণকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নতুন বলে শুরু করছিলেন তিনিই। কিন্তু ফাইনালে হেনরি না খেললে সমস্যায় পড়বে নিউ জ়িল্যান্ড। দুবাইয়ের পিচ স্পিন সহায়ক হলেও নতুন বলে পেসারদের প্রয়োজন। সেই দায়িত্ব নিতে হবে উইল ও’রোর্ক এবং কাইল জেমিসনকে। ভারতের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে হেনরি পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন। তাঁকে যদি ফাইনালে না পাওয়া যায় তা হলে নিউ জ়িল্যান্ডের পেস আক্রমণ যে কিছুটা দুর্বল হবে তা বলাই যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.