রবিবার রাতে নতুন করে আর কোনও ঘটনা ঘটেনি নিয়ন্ত্রণরেখা বা সীমান্তবর্তী এলাকায়। ভারতীয় সেনাকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানাল সংবাদ সংস্থা এএনআই। সেনার তরফে রবিবার রাতকে ‘গত কয়েক দিনে প্রথম শান্ত রাত’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। সোমবারই পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বসতে চলেছে ভারত। দুই দেশের সামরিক বাহিনীর ‘ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্স’ (ডিজিএমও) কথা বলবেন। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হবে।
ভারতীয় সেনার তরফে সোমবার সকালে বলা হয়েছে, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীর এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া অন্যান্য এলাকায় মোটের উপর রাত ছিল শান্তিপূর্ণ। নতুন করে কোনও অশান্তি বা ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। গত কয়েক দিনের মধ্যে এটাই প্রথম শান্ত রাত।’’
শনিবার ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী জানিয়েছিলেন, শনিবার বিকেল ৫টা থেকে সংঘর্ষবিরতি চালু হবে। সোমবার বেলা ১২টায় আবার দুই দেশ আলোচনায় বসবে। শনিবারও ভারত এবং পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ডিজিএমও কথা বলে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছিলেন। সোমবারও তাঁদের মধ্যেই কথা হবে। ডিজিএমও স্তরেই এই বৈঠককে সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, শনিবারের আলোচনায় সংঘর্ষবিরতি ছাড়া আর কোনও বিষয় উঠে আসেনি। কেবল দুই দেশ সীমান্তে হামলা বা পাল্টা হামলা বন্ধ রাখবে বলে সম্মত হয়েছিল। বাকি সমস্যা নিয়ে আলোচনা হতে পারে সোমবার।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দিয়েছিল ভারত। দুই দেশের কূটনৈতিক সংঘাতের অন্যতম মূলে আছে এই চুক্তি। সোমবারের আলোচনায় টেবিলে সেটি অন্যতম প্রধান বিষয় হতে চলেছে বলে অনেকের মত। রবিবার পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা। সেখানে সিন্ধু জলচুক্তি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রসঙ্গের পাশাপাশি কাশ্মীর সমস্যার প্রসঙ্গও পাকিস্তান আলোচনায় তুলে ধরতে পারে বলে দাবি খোয়াজার। রবিবার সন্ধ্যায় ভারতের তিন বাহিনী একটি যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেছে। সেখানে ভারতীয় সেনার ডিজিএমও রাজীব ঘাইও উপস্থিত ছিলেন। সোমবার তাঁর সঙ্গেই আলোচনায় বসতে চলেছেন পাক সেনার ডিজিএমও। তবে বৈঠকে ভারত কী কী বিষয় তুলে ধরতে পারে, তা নিয়ে ঘাই কোনও মন্তব্য করেননি।
ঘাই জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনার তরফে একটি ‘হটলাইন’ বার্তা পাকিস্তানি সেনার উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে রবিবার। ১০ মে রাতের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে সেই বার্তায়। সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তান সীমান্তে গোলাবর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ‘হটলাইন’ বার্তায় জানানো হয়েছে, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে ভারত কঠোর জবাব দেবে।