সুকান্তের সফর ঘিরে উত্তপ্ত বজবজ, ঘেরাও, স্লোগান, উড়ে এল চপ্পলও, আক্রান্তদের নিয়ে রাজভবনে বিজেপি

আক্রান্ত বিজেপি কর্মীকে দেখতে বজবজে গিয়ে বাধার মুখে পড়লেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। পথ আটকানোর চেষ্টা হল, ঘেরাও হল কনভয়, উড়ে এল চপ্পল, গালিগালাজও। তৃণমূল তথা অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের সামনে ঠেলে দিয়ে তাঁর রাস্তা আটকানোর চেষ্টা করেছে বলে তোপ দাগলেন সুকান্ত। আক্রান্তদের নিয়ে বজবজ থেকে কলকাতায় ফিরে রাজভবনে গেলেন অভিযোগ জানাতে।

বুধবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বজবজ-১ বিডিও অফিসের সামনে বিজেপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের উপরে তৃণমূলের হামলার অভিযোগ উঠেছিল। দলীয় চার স্থানীয় নেতাকর্মীকে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে বিজেপির দাবি। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত সেই ঘটনার কথা জানিয়ে বুধবারই চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজকুমার আগরওয়ালকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি বজবজ যান আক্রান্ত কর্মীদের দেখতে। সুকান্তের সেই সফর ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা।

বৃহস্পতিবার সুকান্ত বজবজের হালদারপাড়ায় বিজেপি কর্মী জয়দেব দত্তের বাড়ি যাবেন জেনেই এলাকায় বিক্ষোভের তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। সুকান্তের কনভয় পোপপাড়া এলাকায় পৌঁছতেই তৃণমূল সমর্থকেরা ‘চোর চোর’ স্লোগান দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সুকান্ত হালদারপাড়ায় পৌঁছোনোর পর। সেখানে বিজেপি সভাপতিকে লক্ষ্য করে কটূক্তি, গালিগালাজ শুরু হয়। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর বাড়ি পৌঁছোনোর রাস্তা আটকানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীদের চেষ্টায় সুকান্ত এবং তাঁর সঙ্গে যাওয়া বিজেপি নেতারা জয়দেবের বাড়িতে ঢোকেন। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন। যখন সুকান্ত এলাকা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় চপ্পল ও জলের বোতল।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের একটি বড় বাহিনী। পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী নিজেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই ব্যক্তির উপর মৃদু লাঠিচার্জও করে পুলিশ। তবে ঘটনার জেরে কিছু ক্ষণ বজবজ ট্রাঙ্ক রোড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সুকান্ত পরে বলেন, ‘‘গতকাল (বুধবার) মুখ্যমন্ত্রী কোন মুখে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে গণতন্ত্রের কথা বলছিলেন, আমি বুঝতে পারছি না। আজ (বৃহস্পতিবার) গোটা দেশ দেখল পশ্চিমবঙ্গে কেমন গণতন্ত্র রয়েছে।’’ তৃণমূলের স্থানীয় নেতা জাহাঙ্গির খানের কথায় ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার চলছেন বলে সুকান্ত তোপ দাগেন। তাঁর দাবি, জাহাঙ্গির অনুমতি দেননি বলে পুলিশ সুপার ভিড় সরানোর ব্যবস্থা করেননি। বজবজে তাঁর সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তা তিনি সংসদে জানাবেন বলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি দেন।

আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের বেশ কয়েক জনকে নিয়ে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সুকান্ত রাজভবনে পৌঁছন। আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় তাঁরা রাজভবনে ছিলেন। বুধবার কী ঘটেছিল এবং বৃহস্পতিবার কী ঘটেছে, তা বিশদে রাজ্যপালকে জানানো হয়েছে বিজেপির তরফ থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.