দিল্লিতে বিদায় হলো আপ, এবার যাবে পশ্চিমবঙ্গের পাপ। ২৭ বছর পর দিল্লিতে গেরুয়া ঝড় উঠেছে। আর তাতে খড়কুটোর মতো উড়ে গেছে আপ। এই জয়কে হাতিয়ার করে দলের কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করে ২৬ – এর নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গেও গেরুয়া ঝড় তোলার দামামা বাজিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
দিল্লি দখল করতে বাংলার সাংসদ, বিধায়ক, কর্মী সহ প্রবাসী বাঙালি নেতৃত্বের অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রশংসা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। শনিবার দীর্ঘ ২৭ বছর পর রাজধানী শহরে আম আদমি পার্টিকে গেরুয়া ঝড় উড়িয়ে দিয়েছে। পদ্মের এই দিল্লি জয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দিল্লির নতুন বাসভবনে সেখানে বসবাসকারী প্রবাসী বাঙালি সমাজকে নিয়ে উল্লাসে মাতেন সুকান্ত। স্পষ্ট জানান, ২৭ বছরের বেশি সময় ধরে বিজেপি দিল্লিতে ক্ষমতায় নেই। মানুষ বিরোধীদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি তথা “ফ্রি” ফাঁদে পা না দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত দিল্লি গড়ার লক্ষ্যেই রায় দিয়েছেন।
এরপরই বিজেপির দিল্লি জয়ের সঙ্গে বাঙালিদের কৃতিত্বের কথা বলেন তিনি। মনে করিয়ে দেন, দিল্লির বাঙালি সমাজ এক হয়ে আম আদমি পার্টিকে গদি ছাড়া করেছেন। সেখানে প্রবাসী নেতাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রশংসা করেছেন সুকান্ত মজুমদার। জয়ের জন্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাত সহ বঙ্গ নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন তিনি।
তারপরেই আক্রমণ শানান রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। মনে করিয়ে দেন তৃণমূলের পতন এবার আসন্ন। দিল্লিতে বসবাসকারী বাঙালিরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রত্যাখ্যান করেছেন। মোদীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। এবার লক্ষ্য বাংলা। আগামী ২৬- এর নির্বাচনে তৃণমূলের হার শুধু সময়ের অপেক্ষা। মুখে যতই বিশ্ব বাংলা বলা হোক, বাংলা আসলে নিঃস্ব বাংলা। তাঁর হুঙ্কার, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের বাংলায় আমরা শীঘ্রই গেরুয়া পতাকা তুলব।
এককথায় বিজেপির দিল্লি জয়ের পর সুকান্ত মজুমদারের এই ভোকাল টনিক বঙ্গ বিজেপির জন্য বেশ কাজ করবে বলে মনে হচ্ছে যা আগামীতে ২৬- এর নির্বাচনে তৃণমূলের জন্য ক্ষতিকর বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
তাঁর কথায়, দিল্লি জয়ের অভিজ্ঞতাকে বাংলায় প্রয়োগ করা হবে, যথাযথভাবে। আমরা জানি কী করে ব্যাটে বলে করতে হয়। আমাদের মাঝে মধ্যেই ব্যাটে বলে হচ্ছে। আর এই ভাবে ব্যাটে বলে হলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাউন্ডারির বাইরে করে দেওয়া হবে। আর তাহলেই খেলা শেষ।
তিনি আরো বলেন, দিল্লির বাঙালিদের কাছ থেকে তৃণমূলের জন্য একটা স্পষ্ট বার্তা গেল, যে সমস্ত বাঙালিরা পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থাকে তাদের চোখ খুলে গেছে। গোটা ভারতবর্ষে কী চলছে তারা দেখতে পাচ্ছে। দিল্লিতে কী হচ্ছে তারা দেখতে পাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গেও কী হচ্ছে তারা দেখতে পাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ, যারা গ্রামে ও রাজ্যে আবদ্ধ তারা দেখতে পাচ্ছেন না, কারণ রুটি-রুজির জন্য ওরা ব্যস্ত। কিন্তু যে বাঙালি গোটা দেশের উন্নয়ন দেখছে, তারা কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের সঙ্গে নেই।
এরপরে আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আতিশীর উদ্দেশ্যে আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, আমি আগেই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলাম যে অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও আতিশী হারবেন। কেজরিওয়াল হেরে গেলেও অল্পের জন্য বেঁচেছেন আতিশী। আমি জানি কিসের জোরে উনি জিতেছেন, এই মুহূর্তে সেটা বলতে চাইছি না।
অন্যদিকে আম আদমি পার্টির এমন করুন অবস্থা দেখে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমার মনে হচ্ছে না আম আদমি পার্টি আর বেশিদিন থাকবে। দিল্লির মতো পাঞ্জাবেও আপ ভেঙে পড়বে। বুদবুদের মত উত্থান হয়েছিল, ধীরে ধীরে কেজরিওয়ালের দলের সমাপ্তি ঘটতে চলেছে।