ধ্বংসস্তূপে এখনও আটকে ছয়, চলছে উদ্ধারকাজ, গার্ডেনরিচের ঘটনায় গ্রেফতার এক: ফিরহাদ

গার্ডেনরিচের বহুতলের ধ্বংসস্তূপের ভিতর এখনও ছ’জন আটকে রয়েছেন। এমনটাই জানানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের তরফে। তবে সেই ছ’জনের মধ্যে এক জনের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বাকিদের থেকে কোনও সাড়া পাচ্ছেন না উদ্ধারকারীরা। ফলে তাঁরা কী অবস্থায় আছেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। আতঙ্কের প্রহর কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষ।

সোমবার সকলে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভিতরে ছ’জন আটকে আছেন। এক জনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আর কেউ সাড়া দিচ্ছেন না।’’ দমকলের তরফে জানানো হয়, ৮৫ শতাংশ উদ্ধারকাজ হয়ে গিয়েছে। ঘিঞ্জি এলাকায় বহুতলটি এমন ভাবে ভেঙে পড়েছে, উদ্ধারে সময় লাগছে।

গার্ডেনরিচের বহুতলে উদ্ধারকাজ চলছে।

রবিবার রাত ১২টা নাগাদ গার্ডেনরিচের ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ে পাশের ঝুপড়ির উপর। বেশ কয়েকটি টালির চালের বাড়ি গুঁড়িয়ে যায়। রাতেই সেখানে পৌঁছন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ঘটনাচক্রে, যিনি ওই এলাকার বিধায়কও। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা সারা রাত এলাকায় ছিলেন। জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। সকালে ফিরহাদ জানান, ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ফিরহাদ সকালে জানান, যেখানে বাড়িটি ভেঙে পড়েছে সেখানে ২১ জন ছিলেন। ১৩ জনকে উদ্ধার করা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। যাঁরা আটকে আছেন, তাঁদের জল এবং অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সাত জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এক জন ভর্তি রয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালে। সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর মেয়রের মতো তিনিও মেনে নিয়েছেন, বহুতলটি বেআইনি ভাবে তৈরি করা হচ্ছিল। অর্থাৎ, তৈরির জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়নি। এই বেআইনি কাজের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান মমতা। ঘোষণা করা হয়েছে ক্ষতিপূরণও। ফিরহাদ জানান, মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা এবং আহতদের এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর মমতা বলেন, ‘‘আমি শুনলাম, এক জনের পা আটকে আছে। তবে তিনি বেঁচে আছেন। তাঁকে উদ্ধার করা হবে। এ ছাড়া কয়েক জন আটকে আছেন এখনও। আমাদের টিম সারা রাত কাজ করেছে। পুলিশ, মন্ত্রী, মেয়রের সঙ্গে কাজ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। এই ঘটনায় আমি মর্মাহত।’’ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি জানান, যাঁরা চিকিৎসাধীন, তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.