আইএসএলে ছয় ম্যাচ ধরে জয় অধরা, ঘরের মাঠে হারের পর দুই অজুহাত দিচ্ছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ

অজুহাত দিচ্ছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। অজুহাত দিচ্ছেন দলের হারের। আইএসএলে টানা ছ’টি ম্যাচ জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। মঙ্গলবার ঘরের মাঠে মুম্বই সিটি এফসির কাছে হেরেছে তারা। তার পরেই দলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত জানিয়েছেন, দলের বিদেশি ফুটবলার কম থাকার কারণেই হারতে হয়েছে তাঁদের। সেই সঙ্গে চোটকেও দায়ী করছেন তিনি।

আইএসএলের ওয়েবসাইটে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে কুয়াদ্রাত জানিয়েছেন, মাত্র দু’জন বিদেশি ছিল তাঁর কাছে। বাকিদের পেলে খেলার ফল অন্য রকম হত। কুয়াদ্রাত বলেন, “আমাদের আজ অন্য রকমের দল খেলাতে হয়েছে। মাত্র দু’জন বিদেশি আমাদের হাতে ছিল। আর এই লিগে তো বিদেশিরাই তফাৎ গড়ে দিচ্ছে। আমরা সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। কারণ, ওখানে আমরা ছয় বিদেশি খেলাতে পেরেছি। আজ ক্লেটন (সিলভা) ছিল না। তা-ও চেষ্টা করার জন্য দলের ছেলেদের অনেক ধন্যবাদ জানাই। মুম্বই যথেষ্ট ভাল দল। চার জন ভাল বিদেশি ফুটবলারকে নিয়ে নেমেছিল ওরা। ওদের মতো একটা দলের বিরুদ্ধে আমার দলের ছেলেরা যা খেলেছে, তার প্রশংসা করতেই হবে।”

আইএসএলের খারাপ পারফরম্যান্স সুপার কাপ দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করছেন লাল-হলুদ কোচ। এখনও তিনি টেনে নিয়ে আসছেন সুপার কাপের ডার্বিতে মোহনবাগানকে হারানোর প্রসঙ্গ। কুয়াদ্রাত বলেন, “১৫ দিন আগেই আমরা একটা টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, সেখানে মোহনবাগানকে হারিয়েছি। কিন্তু তার পরে সাউল (ক্রেসপো), পার্দো (হোসে) চোট পেয়ে গেল। কার্ড সমস্যায় ক্লেটনকেও আজ পেলাম না। এখন আমাদের সামনে আর একটা লিগ, যেখানে ছ’টি দল খেলছে। পাঞ্জাব আগের দিন জিতে আমাদের চেয়ে এগিয়ে গিয়েছে। তবে কোন পরিস্থিতিতে এমন হল, আশা করি সমর্থকেরা তা বুঝতে পারবেন।”

ঘরের মাঠে মুম্বইয়ের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে ছ’টি পরিবর্তন করেছিলেন কুয়াদ্রাত। দলের নির্ভরযোগ্য ফুটবলার নন্দকুমারকে শুরু থেকে খেলাননি। ফলে আক্রমণে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কেন নন্দকে নামাননি তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন কুয়াদ্রাত। ইস্টবেঙ্গল কোচ বলেন, “আমাকে আমার খেলোয়াড়দের সুরক্ষিত রাখতে হবে। নন্দ এর আগের সব ম্যাচে খেলেছে। তাই ওকে এই ম্যাচে শুরু থেকে খেলাতে পারিনি। ওকে আর বিষ্ণুকে পরে নামাই। ওরা দুজনে মিলে অনেকগুলো সুযোগও তৈরি করেছে। তবে বেশিরভাগই হাফ চান্স। বারবার গোলের সামনে গিয়ে ভুল করেছে। তবে ওরা নামার পরে প্রতিপক্ষকে চাপে রেখেছিল।”

মুম্বইয়ের কাছে হেরে পয়েন্ট তালিকায় ১০ নম্বরে নেমে গিয়েছে লাল-হলুদ। বাকি আর ৯টি ম্যাচ। এখনও প্রথম ছয়ে শেষ করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুয়াদ্রাত। তিনি বলেন, “আমাদের সেরা ছয়ে থাকার সম্ভাবনা এখনও ১০০ শতাংশ রয়েছে। আমি অন্তত বিশ্বাস করি এই কথা। আমি চাই আমাদের সমর্থকেরাও বিশ্বাস করুক যে, আমাদের সেরা ছয়ে থাকার সম্ভাবনা এখনও আছে। আমরা ওখানে পৌঁছনোর জন্য লড়াই করতে পারব বলেই বিশ্বাস করি আমি।”

এর পরে পয়েন্ট তালিকার লাস্ট বয় হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের। সেই ম্যাচে দল ঘুরে দাঁড়াবে বলে কথা দিয়েছেন তিনি। কুয়াদ্রাত বলেন, “আমাদের এখন নতুন করে দল সাজাতে হবে, যেখানে আমরা চারজন বিদেশিকে পেতে পারি। এটাই আমাদের এখনকার পরিকল্পনা। গত দুটো ম্যাচে যেটা সম্ভব হয়নি। ফুটবলে খুব কম সময়ে অনেক কিছু বদলে যায়। এখন আমাদের ফের শক্তিশালী হয়ে উঠতে হবে। অনেক দলই সেরা ছয়ে থাকার জন্য লড়াই করছে। এই ম্যাচে আমরা তিন পয়েন্ট খোয়ালাম। গত ম্যাচেও নর্থইস্টের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট হারাতে হয়েছে। ফলে ওরাও আমাদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। তবে আমাদের সৌভাগ্য যে, ওদের চেয়ে আমাদের গোলপার্থক্য ভাল। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াই আমরা।”

যদিও কার্ড সমস্যায় মহেশ নাওরেম সিংহ ও লালচুংনুঙ্গাকে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে পাবে না ইস্টবেঙ্গল। তাতে দলের বিশেষ সমস্যা হবে না বলেই মনে কপেন কুয়াদ্রাত। তিনি বলেন, “পরের ম্যাচে আমরা নুঙ্গা ও মহেশকে পাব না। তবে চার জন বিদেশিকে খেলানোর চেষ্টা করব। ভাসকেস (ভিক্টর) ও ব্রাউন (ফেলিসিয়ো) প্রতি দিন উন্নতি করছে। কাল ওরা আবার অনুশীলনে নামবে। ওদের ফিটনেস নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। ক্লেটন দলে ফিরবে। তবে সাউলকে হায়দরাবাদ ম্যাচেও পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.