প্রবীণের সঙ্গেই নবীনের শিল্পভাবনার মিলমিশ, হাতে হাত ধরে নতুন সৃষ্টির পথ দেখাচ্ছে সিমার ‘সামার শো’

শিল্প একা নয়, হাতে হাত ধরে চলার শিক্ষাই দেয়। ভাবনা ভিন্ন হতে পারে। মতাদর্শও এক নয়। তবুও বহু শিল্পীর ভাবনা ও প্রকাশের বিভিন্ন স্তর যখন একসূত্রে গাঁথা হয়ে যায়, তখনই তৈরি হয় এ অনুপম শৈল্পিক কাজ। এ প্রমাণ তো বার বারই মিলেছে। আবার সে কথাই মনে করাল সিমা গ্যালারির ‘সামার শো’। প্রবীণ ও নবীন প্রজন্মের শিল্পভাবনা মিলে গেল এক নতুন ছন্দে। সেখানে কল্পনা, বাস্তব, বিস্ময়, বিশ্বাস, আশা— সব মিলে তৈরি হল এক অন্য জগৎ।

প্রতি বছরই নতুন ভাবনা নিয়ে আসে সিমা আর্ট গ্যালারির ‘সামার শো’। এ বারের ভাবনা, পুরাতনের সঙ্গে নতুনের মেলবন্ধন। সেই ১৯৮০ সাল থেকে বর্তমান সময় অবধি চিত্রকলা, ভাস্কর্যে যে পরিবর্তন এসেছে, শিল্পভাবনায় যে নতুনত্ব এসেছে, তারই প্রকাশ ঘটেছে এ বারের প্রদর্শনীতে। পেন্টিং, ড্রয়িং থেকে ভাস্কর্য, গ্রাফিক্স, আর্ট ইনস্টলেশন, সবই দেখা যাবে সিমার ‘সামার শো’-তে।

সিমার 'সামার শো'-তে নানা রকম পেন্টিং, আর্ট ইনস্টলেশন, ভাস্কর্য দেখা যাবে।

৩৫ জনেরও বেশি শিল্পীর কাজ দেখা যাবে এ বছরের ‘সামার শো’-তে। প্রবীণ শিল্পী জ্যোতি ভাট, শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায়, শাকিলা শেখের কাজ যেমন দেখা যাবে, তেমনই চন্দন বেজ় বড়ুয়া, অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নবীনদের সৃষ্টিও থাকবে। থাকছে ইনস্টলেশন, গ্রাফিক পেন্টিং। শনিবার সন্ধ্যায় ‘সামার শো’-এর সূচনা হয় বহু শিল্পীর উপস্থিতিতে। সিমা গ্যালারির অধিকর্তা রাখী সরকার জানান, প্রতি বছরের মতো এ বারও প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য বিভিন্ন ধরনের কাজ তুলে ধরা শিল্পে উৎসাহী এবং শিক্ষানবিশ শিল্পীদের জন্য। তিনি বলেন, ‘‘শিল্প শিল্পের জন্য। এমন কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হয়েছে এ বারের ‘সামার শো’-এর। যে কোনও শিল্পের নিজস্ব ভাবনা থাকে। তবে এই প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য কোনও মতাদর্শ তুলে ধরা নয়। বরং শিল্পীর সৃষ্টিকে সম্মান জানানো ও সকলের সামনে তাঁর কাজকে উপস্থাপনা করা। সমকালীন শিল্পীদের কাজ দেখবেন একে-অপরে, এবং অন্যরা। ভাবনার আদানপ্রদান ঘটবে।”

প্রবীণদের সঙ্গেই নবীনদের শিল্পকাজ দেখা যাবে 'সামার শো'-তে।
সিমা গ্যালারির 'সামার শো' প্রদর্শনীতে।

চারপাশের পরিবেশ যে ভাবে বদলাচ্ছে, ছবিও তেমন নতুন ধরনের হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে যে শিল্পের নতুন নতুন মাধ্যম আসছে, ভাবনার বৈচিত্র ঘটছে, তা দেখা যাবে গ্যালারির প্রতিটি দেওয়ালে। কোথাও সে কাল আর এ কালের ল্যান্ডস্কেপ, কোথাও হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস, কোথাও ফুটে উঠেছে নারীর লড়াইয়ের কাহিনি। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষের শ্রমযাপনের ছবি রয়েছে। রয়েছে শান্তির বার্তাও। শিল্পী শ্রেয়সী চট্টোপাধ্যায় বললেন, “প্রতিটি শিল্পকাজ একে অপরের থেকে আলাদা। এত রকম ছবি, আর্ট ইনস্টলেশন, গ্রাফিক পেন্টিং রয়েছে, কিন্তু একে অপরের ভাবনার মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। কেউ কারও ভাবনা নিয়ে কাজ করেননি। প্রত্যেকের ভাবনা ও সৃষ্টি আলাদা। আর এত রকম ভাবনার সংমিশ্রণ ঘটিয়েছে সিমা গ্যালারি। ”

প্রদর্শনী শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। চলবে অগস্ট মাসের ২ তারিখ অবধি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.