ইংল্যান্ডে যাওয়ার আগে তিন ক্রিকেটারকে ফোন করেছিলেন শুভমন, তার পরেই ভাগ্যবদল ভারতের টেস্ট অধিনায়কের

ইংল্যান্ড সিরিজ় খেলতে যাওয়ার আগে অনেকেই তাঁকে নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেছিলেন। টেস্ট দল থেকে যিনি আর একটু হলেই বাদ পড়ে যাচ্ছিলেন তাঁকে অধিনায়ক বানিয়ে দেওয়া— নির্বাচকদের এই সিদ্ধান্ত অনেকেই মানতে পারেননি। সকলকে চুপ করিয়ে দিয়েছেন শুভমন গিল। ইংল্যান্ড সিরিজ়‌ে সর্বোচ্চ রান করেছেন। দেশের মাটিতে প্রথম বার দলকে নেতৃত্ব দিতে নামার আগে শুভমন জানালেন, সচিন তেন্ডুলকর এবং স্টিভ স্মিথের পরামর্শ পেয়েছেন তিনি।

ম্যাচ শুরুর আগে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে শুভমন বলেন, “বিদেশে ভাল খেলতে না পারার একটা চাপ ছিলই। তবে নিজের অনুশীলন, মানসিকতা এবং টেকনিক নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। সচিন স্যরের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ম্যাথু ওয়েডের (গুজরাতে শুভমনের সতীর্থ) থেকে নম্বর নিয়েছিলাম স্টিভ স্মিথের। ওর সঙ্গেও কথা হয়েছে। দু’জনে একই কথা বলেছে, সোজা ব্যাটে রক্ষণ করো, রান করো স্কোয়্যারে।”

‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সচিনকে ফোন করার পর বেশ ভয়ে ভয়ে ছিলেন শুভমন। তাঁকে শান্ত করেন সচিনই। দু’-একটি মজার কথাও বলেন, ইংল্যান্ডে নিজের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নেন। শেষ ১৫ মিনিটে ব্যাখ্যা করেন, ইংল্যান্ডের বোলারেরা ঠিক কোন লেংথে বল করে শুভমনকে বিপদে ফেলবেন। সচিন পরামর্শ দেন, ব্যাটের সামনের দিক যেন মিড-অফের দিকে থাকে। তাতে স্লিপে ক্যাচ উঠলেও তা স্কোয়্যার লেগের দিকে যাবে। ঘনিষ্ঠমহলে শুভমন বলেছিলেন, “সচিন স্যর বলেছেন যখন তখন ভুল কী করে হয়।”

স্মিথ পরামর্শ দিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে ব্যাট করার মানসিক দিক নিয়ে। বুঝিয়েছিলেন, ইংল্যান্ডের বোলারদের আক্রমণের কৌশল। শুভমনকে ছায়া অনুশীলনের (শ্যাডো প্র্যাকটিস) পরামর্শ দিয়েছিলেন, যাতে মনকে তৈরি রাখা যায়।

আরও এক জনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন শুভমন। তিনি কেন উইলিয়ামসন। নিউ জ়‌িল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক পরামর্শ দিয়েছিলেন, শরীরের কাছাকাছি থাকা বল খেলতে। ড্রাইভ করার বেশি চেষ্টা না করতে। তিনি পরামর্শ দেন, মনঃসংযোগ ধরে রাখার। ৪৫ মিনিট বোলারকে দাও, বাকি দিন তোমার, এটাই ছিল উইলিয়ামসনের পরামর্শ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ়‌ সিরিজ়ের আগে ভারতের লক্ষ্য নিয়েও কথা বলেছেন শুভমন। গত বছর নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে সিরিজ়‌ হারের কথাও উঠে এসেছে তাঁর মুখে। বলেছেন, “এখানে আসার আগে সব দলই আমাদের হারাতে চায়। নিউ জ়‌িল্যান্ড এ দেশে আসার আগে শ্রীলঙ্কার ঘূর্ণি উইকেটে খেলে এসেছিল। তাই ওদের অনুশীলন তো ওখানেই হয়ে গিয়েছিল। মনে হয় আমাদের প্রস্তুতিটাই ঠিক মতো হয়নি।”

ভারতীয় দলে নতুন সংস্কৃতিও তৈরি করতে চান শুভমন। তাঁর ব্যাখ্যা, “দলের সকলকে বলে দিয়েছি, কী করতে হবে সেটা নিয়ে পুরোপুরি চিন্তামুক্ত থাকতে। কোনও ভয় পেতে হবে না। আমরা পুরোপুরি চেষ্টা করব নিজেদের সেরাটা দেওয়ার। তার পর যদি কোনও দল আমাদের থেকেও ভাল খেলে ফাইনালে চলে যায় তখন কিছু করার থাকবে না। আমরা ভারতে আসা কোনও দলকে শান্তিতে থাকতে দিতে চাই না। টেস্টে অপ্রতিরোধ্য থাকতে চাই। ভারত এত বড় একটা দেশ। এত প্রতিভা চার দিকে। আমরা যদি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠতে না পারি তা হলে আর কী করলাম।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.