এশিয়া কাপের দলে ব্রাত্য শ্রেয়স, জায়গা হল না যশস্বীরও! কেন বাদ দেশের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটার, যুক্তিহীন ব্যাখ্যা নির্বাচক আগরকরের

এশিয়া কাপের ভারতীয় দলে জায়গা হল না যশস্বী জয়সওয়াল এবং শ্রেয়স আয়ারের। দেশের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটারের দলে না থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এশিয়া কাপের দল ঘোষণার পর দু’জনকে না রাখার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর। তাতে ক্রিকেটীয় যুক্তির থেকে বেশি রয়েছে দল নির্বাচনে সীমাবদ্ধতার কথা।

ইনিংস শুরু করতে পারেন এমন তিন জন রয়েছেন দলে। শুভমন গিল, সঞ্জু স্যামসন এবং অভিষেক শর্মা। শুভমন দলের সহ-অধিনায়ক। তাঁর নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন নেই। সঞ্জু রয়েছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসাবে। সঙ্গে তাঁর অভিজ্ঞতা। তৃতীয় ওপেনারের জায়গায় লড়াই ছিল অভিষেক এবং যশস্বীর। এই জায়গাতেই পিছিয়ে পড়েছেন মুম্বইয়ের ব্যাটার।

আগরকর বলছেন, ‘‘যশস্বীর দলে না থাকা দুর্ভাগ্যজনক। অভিষেকের অতীত পারফরম্যান্স উপেক্ষা করা কঠিন ছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওর পারফরম্যান্স আমরা জানি। অভিষেক বলও করতে পারে। অধিনায়কের হাতে অতিরিক্ত বিকল্প থাকবে। ওদের দু’জনের মধ্যে এক জনকে বসতেই হতো।’’

আগরকর বলতে চেয়েছেন অভিষেকের অলরাউন্ড দক্ষতার জন্যই পিছিয়ে পড়েছেন যশস্বী। বল না করতে পারাই তাঁর বিপক্ষে গিয়েছে তুল্যমূল্য লড়াইয়ে। কিন্তু প্রশ্ন হল, দলে অক্ষর পটেলের মতো বাঁহাতি স্পিনার রয়েছেন। সে ক্ষেত্রে আর এক জন বাঁহাতি স্পিনার আদৌ দরকার পড়বে কি? গত আইপিএলে যশস্বী ১৪টা ম্যাচে ৪৩ গড়ে ৫৫৯ রান করেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫৯.৭১।

শ্রেয়সকে দলে না রাখার ক্ষেত্রে এমন কোনও ক্রিকেটীয় যুক্তি দেননি আগরকর। বরং প্রধান নির্বাচক দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাঁর সীমাবদ্ধতাকে তুলে ধরেছেন। এ ক্ষেত্রে আগরকরের বক্তব্য, ‘‘শ্রেয়সকে দলে না রাখতে পারা আমাদের দোষ নয়। দলে সুযোগ না পাওয়াটা ওর দোষও নয়। দলে ১৫ জনই থাকতে পারে। ১৫ জনের বেশি ক্রিকেটারকে রাখার সুযোগ নেই। কার জায়গায় ওকে নিতাম?’’

শিবম দুবের জায়গায় শ্রেয়সকে নেওয়াই যেত। এ ক্ষেত্রেও হয়ত অলরাউন্ডারের তত্ত্ব খাড়া করতে চাইবেন আগরকরেরা। কিন্তু জসপ্রীত বুমরাহ-অর্শদীপ সিংহেরা থাকতে দুবে বল হাতে বাড়তি কী করবেন? বুমরাহ ব্যর্থ হলে দুবে বল হাতে কামাল করতে পারবেন? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

সাদা দলের ক্রিকেটে শ্রেয়স দেশের অন্যতম সেরা মিডল অর্ডার ব্যাটার। গত দু’বছর আইপিএলের অন্যতম সফল অধিনায়কও। ২০২৫ সালের আইপিএলে ১৭টা ম্যাচে ৫০.৩৩ গড়ে ৬০৪ রান করেন তিনি। তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৭৫.০৭। ছ’টা অর্ধশতরান করেন। তা-ও দলে শ্রেয়সের জায়গা না হওয়ায় বিস্মিত ক্রিকেট মহলের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, এক জন ব্যাটার আর কী করলে জাতীয় দলে জায়গা পাবেন? তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শ্রেয়সের ক্ষেত্রে আগরকর কোনও ক্রিকেটীয় দুর্বলতার কথা বলতে পারেননি।

১৫ জনের দলের দিকে চোখ রাখলে আগরকরের যুক্তি অকাট্য মনে না-ও হতে পারে। দলে এমন একাধিক নাম রয়েছে, যাঁদের থেকে ক্রিকেটীয় দক্ষতা বা অভিজ্ঞতায় শ্রেয়স এগিয়ে। তবু শ্রেয়সের মতো সফল এবং পরীক্ষিত ব্যাটারের জায়গা না হওয়া বিস্ময়কর।

আগরকর বোঝাতে চেয়েছেন, ভারসাম্য বজায় রাখতে গিয়েই ১৫ জনের দলে জায়গা দেওয়া যায়নি শ্রেয়সকে। তাঁকে রিজার্ভ হিসাবেও রাখা হয়নি। মনে করা হচ্ছে, রিজার্ভ হিসাবে রাখলে তাঁর পক্ষে সম্মানজনক হবে না। সে কথা বিবেচনা করেই শ্রেয়সকে রাখা হয়নি রিজার্ভেও। যশস্বীকে অবশ্য রিজার্ভ হিসাবে রাখা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.