প্রকাশের অপেক্ষায় “ষোলো আনা বাবলু”

 টানা সতেরো বছর পাঁচ মাস মোহনবাগানে খেলা সুব্রত ভট্টাচার্যের শেষ ম্যাচের ১৬ নম্বর সবুজ-মেরুন জার্সি গত ৩২ বছর কোথায় রেখে দিয়েছেন? সেই পাঁচ গোলের বদলা মোহনবাগান কখনও নিতে পারলে সেই দলের জন্য কী শপথ নিলেন বাবলু? বাচ্চা ছেলের কাছেও কান মলা খেয়েছিলেন কেন বাগানের ঘরের ছেলে? প্রদীপ ব্যানার্জিকে শ্রেষ্ঠ কোচ মেনে নিয়েও পিকে-কে ভিনডিকটিভ্ কেন বললেন সুব্রত?

চুনী গোস্বামী মোহনবাগানে সুব্রতর রিক্রুটার হলেও পরের দিকে ‘বাবলুকে লাথি মেরে তাড়ানো উচিত’ কেন বলেছিলেন? সুনীল ছেত্রীর ‘ডজে’ কীভাবে ‘গোল’ খেয়েছেন সুব্রত? মোহনবাগানের আদি ও নব্য কর্মকর্তাদের মধ্যে কাদের ক্লাব-অন্ত আর কাদের নিজ-অন্ত তকমা দিচ্ছেন স্পষ্ট বক্তা প্রাক্তন মোহনবাগানী? সুব্রত ভট্টাচার্যকে এখন মোহনবাগান ক্লাবটা দিয়ে দিলেও তিনি কেন নেবেন না?

… এরকম আরও অনেক মশলায় ঠাসা সুব্রত ভট্টাচার্যের বিতর্কিত আত্মজীবনী ‘ষোলো আনা বাবলু’ প্রকাশিত হল বৃহস্পতিবার।

আজকাল তো সৎ লেখা খুব একটা পড়তে পাওয়া যায় না! ‘ষোলো আনা বাবলু’ সেই বিরল একটি সৎ লেখা। খুব দরদি লেখা। তা সত্ত্বেও যথেষ্ট বিতর্কিত। সোজা কথায়, মোহনবাগান জনতার প্রিয় ‘বাবলুদা’র বিতর্কিত আত্মজীবনী। যার সহ-লেখক নামী ক্রীড়া সাংবাদিক সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায়।

বইটি সম্পাদনা করেছেন বিখ্যাত স্পোর্টস জার্নালিস্ট গৌতম ভট্টাচার্য। প্রাক্তন আনন্দবাজারি সুপ্রিয়-গৌতম জুটিতে ‘গুরু’ এবং ‘গোল’-এর পর ‘ষোলো আনা বাবলু’ ওঁদের পার্টনারশিপের ঘোষিত হ্যাটট্রিক। প্রবাদপ্রতিম কোচ পিকে, কিংবদন্তি ফুটবলার ও কোচ সুভাষ ভৌমিক-এর পর মোহনবাগানের ঘরের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্যের আত্মজীবনী সুপ্রিয়র পরপর তিন বছরে দুই মলাটের ভেতর তৃতীয় সহ-লিখন। এর মাঝে মহম্মদ হাবিবের ওপর একমাত্র বাংলায় বইও লিখেছেন সুপ্রিয়। গৌতম-সুপ্রিয়, দুজনেই বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাই স্কুল-এর প্রাক্তনী।

টানা সতেরো বছর ১৬ নম্বর সবুজ-মেরুন জার্সিতে দাপিয়ে খেলা সুব্রত ভট্টাচার্যের আত্মজীবনী ‘ষোলো আনা বাবলু’ বইয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ২৯ জুলাই, শনিবার ‘মোহনবাগান দিবস’-এ মোহনবাগান মাঠে। এর চেয়ে এই বইয়ের দিনের আলো দেখার উৎকৃষ্ট স্থান আর সময়, আর কী হতে পারত?

সুব্রতর আত্মজীবনীর উদ্বোধন করলেন তাঁর এককালের শিষ্য, বর্তমানে জামাই, ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। বিখ্যাত শ্বশুরের আত্মজীবনী উদ্বোধন করতেই শুধু শনিবার কয়েক ঘন্টার জন্য বেঙ্গালুরু থেকে উড়ে এসেছিলেন সুনীল।

বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দুই প্রধান সহ শীর্ষ ফুটবল কর্তারা, ময়দান কাঁপানো ফুটবলাররা, সুব্রতর বিখ্যাত প্রাক্তন সতীর্থরা এবং অন্যান্য জগতের বিশিষ্টরা।

গোটা অনুষ্ঠানটি সুচারু রূপে সঞ্চালনা করেন প্রাক্তন তারকা মোহনবাগান ফুটবলার তথা বর্তমানে নামী ধারাভাষ্যকার মানস ভট্টাচার্য এবং বিখ্যাত সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.