‘এক ইঞ্চির’ জন্য জয় হাতছাড়া শাকিবদের, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৪ রানে হার বাংলাদেশের

ভারত-পাকিস্তানের পরের দিনই নিউ ইয়র্ক দেখল আরও একটা উত্তেজক ম্যাচ। শেষ ওভারে নাটকীয় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের হারানোর একদম কাছাকাছি এসেও পারল না বাংলাদেশ। বলা ভাল, ‘এক ইঞ্চি’র ব্যবধানে হারতে হল তাদের। ৪ রানে হারতে হল শাকিব আল হাসানের দলকে। শেষ ওভারে ১১ রানও তুলতে পারল না তারা। রবিবারের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের প্রতিচ্ছবিই দেখা গেল এ দিনের ম্যাচে।

২০তম ওভারের পঞ্চম বলটা সহজে ভুলতে পারবেন না মাহমুদুল্লাহ। কেশব মহারাজের ফুলটস বল সপাটে মেরেছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যাটে-বলে সংযোগ ঠিক মতো হয়নি। তবু নিউ ইয়র্কের বড় মাঠ প্রায় পেরিয়ে গিয়েছিল সেটি। লং অন বাউন্ডারির একদম ধার থেকে দু’হাত বাড়িয়ে ছোঁ মেরে সেই বল ধরে নেন এডেন মার্করাম। সেখানেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন। বাউন্ডারির দড়ি থেকে এক ইঞ্চি দূরে ছিল মার্করামের পা।

রবিবার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ যে পিচে খেলা হয়েছে, সেই একই পিচে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে খেলতে নেমেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশ। রাতারাতি পিচের চরিত্রে বদল আসবে এমন ধারণা কারওরই ছিল না। হলও তাই।

ভারতকে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে হয়েছিল। এ দিন দক্ষিণ আফ্রিকা টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়ল। ভাল বল করলেন তানজিম হাসান। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং বিভাগ একাই ধসিয়ে দিলেন তিনি। প্রথম ওভারেই ফেরালেন রিজ়া হেনড্রিক্সকে। তৃতীয় ওভারে ফিরলেন কুইন্টন ডি’কক। একে একে ফিরলেন এডেন মার্করাম (৪) এবং ট্রিস্টান স্টাবসও (০)।

রবিবার ভারতের হয়ে হাল ধরেছিলেন ঋষভ পন্থ এবং অক্ষর পটেল। এ দিন দক্ষিণ আফ্রিকার ত্রাতা হলেন হেনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার। চাপের মুখে মাথা ঠান্ডা রেখে ব্যাট করলেন। আইপিএলে ঝোড়ো ব্যাটিং করা ক্লাসেনও অদ্ভুত রকমের শান্ত ব্যাটিং করলেন। ঝুঁকি নিতে দেখাই গেল না তাঁকে। উল্টো দিকে থাকা মিলারও তাই। চাপের মুখে জুটি বেঁধে ধস সামলালেন তাঁরা।

তাসকিন আহমেদের বলে ক্লাসেন ফিরলেন ১৮তম ওভারে। ৪৪ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। পরের ওভারেই দক্ষিণ আফ্রিকা হারায় মিলারকেও (৩৮ বলে ২৯)। শেষ দিকে মার্কো জানসেন এবং কেশব মহারাজও রানের গতি বাড়াতে পারেননি। ২০ ওভারে ১১৩-৬ তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা।

বাংলাদেশেরও শুরুটা ভাল হয়নি। জানসেন প্রথম ওভারে ১ রান দেওয়ার পর দ্বিতীয় ওভারের শুরুতেই কাগিসো রাবাডাকে পর পর দু’টি চার মারেন তানজিদ হাসান। সেই ওভারেই রাবাডার বলে আউট হন তিনি। এর পর বাংলাদেশের ব্যাটারদের সাজঘরে আসা-যাওয়ার পালা চলতে থাকে। নাজমুল হোসেন (১৪), লিটন দাস (৯), শাকিব আল হাসান (৩) পর পর ফিরে যান।

সেখান থেকে জুটি গড়েন তৌহিদ হৃদয় এবং মাহমুদুল্লাহ। দু’জনে মিলে পঞ্চম উইকেটে ৪৪ রানে জুটি গড়েন। কিন্তু দুই ব্যাটারকেই ধীরে ধীরে খেলতে হয়েছে। ফলে একটা সময় আস্কিং রেট বাড়তে থাকে। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে তৌহিদ ফেরার পর চাপ আরও বাড়ে বাংলাদেশ।

তখনও উইকেটে ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। আশা বেঁচে ছিল বাংলাদেশের। আস্কিং রেট তখনও ধরাছোঁয়ার মধ্যে ছিল। মার্করাম তিন পেসারেরই ওভার আগে শেষ করে দিলেন। ফলে শেষ ওভার করতে এগিয়ে আসতে হল মহারাজকে। এই পরিস্থিতিতে স্পিনারের বোলিং খেলা তুলনায় সহজ। মাত্র ১১ রান দরকার ছিল জেতার জন্য। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ সে ভাবে ব্যাট করার সুযোগই পেলেন না। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে এক রান নেন। তার পর পঞ্চম বলে আউট। আরও দু’টি বল খেলার সুযোগ পেলে হয়তো ম্যাচ শেষ করে আসতে পারতেন। তা হল না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.