টি-টোয়েন্টির পর এক দিনের সিরিজ়ও জিতল ভারত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে রানে ফিরলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। ভারতের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে রইলেন শুধু বিরাট কোহলি। কটকেও রান পেলেন না তিনি। রবিবার ইংল্যান্ড ৩০৪ রান করেছিল। ভারত জবাবে ৩৪ বল বাকি থাকতেই জয়ের রান তুলে নেয়। সেই সঙ্গে জিতে নেয় সিরিজ়ও।
আবার জাডেজার ভেল্কি
কটকের পিচে ভেল্কি দেখালেন অভিজ্ঞ জাডেজা। ১০ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে তিনটি উইকেট তুললেন তিনি। বেন ডাকেট (৬৫), জো রুট (৬৯) এবং জেমি ওভারটনের (৬) উইকেট তুলে নিলেন জাডেজা। তাঁর দাপটে ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ভেঙে পড়ে। যে কারণে বড় রান তোলার ইঙ্গিত দিয়েও থমকে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। এক সময় মনে হচ্ছিল ৩৫০ রান তুলে ফেলবে ইংল্যান্ড। কিন্তু জাডেজার দাপটে ৩০৪ রানেই শেষ হয়ে যায় তারা। শুধু গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেওয়াই নয়, রানও আটকে রাখেন তিনি।
রোহিতের রানে ফেরা
ছক্কা মেরে শতরান করলেন রোহিত শর্মা। বুঝিয়ে দিলেন আবার আগের মেজাজে ফিরেছেন। যে রোহিত মারার বল পেলে মারবেনই। সে তিনি যতই শূন্য রানে ব্যাট করুন বা শতরানের মুখে। ছক্কা মারতে দ্বিতীয় বার চিন্তা করেন না। রোহিতের ৯০ বলে ১১৯ রানের ইনিংস ভারতের ৩০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করার কাজটি সহজ করে দেয়। আদিল রশিদের বলে ছক্কা মেরে শতরান করেন রোহিত। যিনি কিছু ক্ষণ আগেই বিরাট কোহলিকে আউট করেছিলেন। তাঁকে ছক্কা মেরেই এক দিনের ক্রিকেটে ৩২তম শতরানটি করে ফেললেন রোহিত। ভারতকে জয়ের রাস্তা দেখালেন অধিনায়কই। তাঁর সঙ্গে শুভমন গিল (৬০) ওপেনিং জুটিতে ১৩৬ রান তোলেন।
চিন্তা বিরাটকে নিয়ে
কটকে মাত্র ৮ বল খেললেন বিরাট কোহলি। করলেন ৫ রান। মাত্র একটি বাউন্ডারি মেরেই শেষ হয়ে গেল কোহলির ইনিংস। ১৭তম ওভারে শুভমন গিল আউট হতে খেলতে নেমেছিলেন। গ্যালারিতে চিৎকার শুরু হয়ে যায় তিনি নামতেই। কিন্তু ২০তম ওভারেই ফিরতে হয় কোহলিকে। রশিদের বলটা ছিল অফস্টাম্পের বাইরে। অনেকটা এগিয়ে এসে কভার ড্রাইভ মারতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শরীরের থেকে ব্যাটের দূরত্ব অনেকটাই বেশি ছিল। রশিদের বলের ঘূর্ণিও বুঝতে পারেননি তিনি। বল ব্যাটে লেগে উইকেটকিপার ফিল সল্টের হাতে ক্যাচ জমা পড়ে। রোহিত রানে ফেরায় ভারত যতটা নিশ্চিন্ত, কোহলি রানে না ফেরায় চিন্তা রয়ে গেল ততটাই।
পেসারদের রান দেওয়া
ভারতের জয়ের দিনেও চিন্তা রয়ে গেল পেসারদের নিয়ে। রবিবার কটকে মহম্মদ শামি দিলেন ৬৬ রান। তিনি ৭.৫ ওভার বল করেছেন। হর্ষিত রানা ৯ ওভারে দিয়েছেন ৬২ রান। অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ড্য ৭ ওভারে দিয়েছেন ৫৩ রান। তাঁরা তিন জনেই একটি করে উইকেট নিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে থাকা অর্শদীপ সিংহকে এক দিনের সিরিজ়ে এখনও কোনও ম্যাচ খেলায়নি ভারত। যদি জসপ্রীত বুমরাহ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে না পারেন, তা হলে ভারতীয় পেস আক্রমণ যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে পারে। শামিকে এখনও পুরো মেজাজে দেখা যায়নি। হর্ষিতের অভিজ্ঞতার অভাব স্পষ্ট। অর্শদীপ এক দিনের ক্রিকেটে পরীক্ষিত নন। এমন অবস্থায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ভারতের পেস বিভাগকে নিয়ে চিন্তা রয়েই গেল।
পন্থকে খেলানো উচিত?
লোকেশ রাহুল অস্ট্রেলিয়ায় টেস্টে ভারতের একমাত্র ভরসা ছিলেন। তিনি দলকে টানছিলেন। কিন্তু এক দিনের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে করেছিলেন ২ রান। এই ম্যাচে করলেন ১০ রান। দল যখন চাপ কাটিয়ে ফেলেছে, সেই সময়ও জেতাতে পারছেন না। এটা তাঁর জন্য ভাল বিজ্ঞাপন নয়। যেখানে ঋষভ পন্থের মতো এক জন প্রতিভাবান ব্যাটার বসে রয়েছেন। শেষ এক দিনের ম্যাচে তাঁকে খেলিয়ে দেখে নিতেই পারে ভারত।
শেষবেলায় উইকেট হারানো
গত ম্যাচে জিতে রোহিত জানিয়েছিলেন শেষ দিকে একের পর এক উইকেট হারানোটা উচিত হয়নি। দল জেতার মুখে পৌঁছে গিয়েও উইকেট হারিয়েছিল। সেটা কটকেও দেখা গেল। এই রোগ দ্রুত সারাতে চাইবে ভারত। যে সময় উইকেট পড়েছে, তখন ম্যাচ ভারতের হাতে। তাই জিততে অসুবিধা হয়নি। কোনও ম্যাচে সেটা না হলে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে পারে ভারত। শুরুর দিকের ব্যাটারেরা রান না পেলে তখন রাহুলদের আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। যা কটকে দেখা যায়নি।