স্যালাইন-কাণ্ড: মৃত সন্তান, ১৬ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে রেখা বললেন, ‘খালি হাতে ফিরছি’

১৬ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন রেখা সাউ। স্বামী ও শাশুড়ির সঙ্গে বাড়ি ফিরলেন তিনি। তবে চোখে-মুখে এখনও অসুস্থতার ছাপ স্পষ্ট। শরীরে রয়েছে ক্লান্তিও। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময় ধরা গলায় রেখা বলেন, ‘‘সবাই সন্তান নিয়ে যাচ্ছে। আর আমায় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে!’’

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে স্যালাইন-কাণ্ডে পাঁচ প্রসূতির মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তিন প্রসূতিকে নিয়ে কার্যত যমে-মানুষে টানাটানি চলছে। তাঁরা এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অস্ত্রোপচারের পর আর এক প্রসূতি রেখারও শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তবে অন্যদের তুলনায় তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকায় জেনারেল বেডে রেখেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। বৃহস্পতিবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়।

জন্মের পর থেকেই অসুস্থ ছিল রেখার পুত্রসন্তান। ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা চলছিল তার। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। গত ১৬ জানুয়ারি ভেন্টিলেশনে মৃত্যু হয় রেখার সদ্যোজাতের। ময়নাতদন্তের পর তার দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তার সপ্তাহখানেক পর রেখা বাড়ি ফিরছেন। শাশুড়ি পুষ্প সাউয়ের হাত ধরে কিছুটা টলতে টলতে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসেন রেখা। চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘‘প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলাম। সিজ়ার হয়েছিল। তার পর পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু আজ খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।’’ তার অভিযোগ, স্যালাইনের জন্য অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। যাঁর বা যাঁদের জন্য তিনি সন্তানহারা হলেন, তার বিচার চান রেখা। তাঁর স্বামী সন্তোষেরও দাবি একই।

রেখা, মামনি, মাম্পি সিংহ, মিনারা বিবি, নাসরিন খাতুন— এই পাঁচ প্রসূতি গত ৮ জানুয়ারি সন্তান জন্মের পরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অভিযোগ, স্যালাইন নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। এর পরেই স্যালাইনের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। রবিবার রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় মাম্পি, মিনারা এবং নাসরিনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.