ভারতের অভিযোগের পর শুভমনদের পাল্টা কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন রুট, বাতলে দিলেন বল সমস্যার সমাধানও

ভারতকে পাল্টা দিয়েছেন জো রুট। ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ়ে ব্যবহার হওয়া ডিউক বলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে ভারত। শুভমন গিলদের পাল্টা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন রুট। পাশাপাশি, এই বল সমস্যার একটা সমাধানও বাতলে দিয়েছেন তিনি।

লর্ডসে দ্বিতীয় দিন বার বার বল নিয়ে আম্পায়ারদের কাছে অভিযোগ করছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। দ্বিতীয় দিন শুরুর স্পেলে জসপ্রীত বুমরাহ ইংল্যান্ডের তিন ব্যাটারকে আউট করার পরেও বল নিয়ে খুশি ছিল না ভারতীয় দল। তাঁরা অভিযোগ করেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সৈকতের কাছে। বাংলাদেশের আম্পায়ার খতিয়ে দেখেন, সত্যিই বলের আকার বদলে গিয়েছে। তত ক্ষণে সেই বলে মাত্র ১০.৩ ওভার খেলা হয়েছে।

বল বদলের পর যে বল দেওয়া হয় তা নিয়েও খুশি ছিলেন না শুভমনেরা। বল হাতে পেয়েই শুভমন তা নিয়ে আপত্তি করেন। তাঁদের অভিযোগ, বল মোটেই ১০ ওভার পুরনো নয়। আরও পুরনো। মহম্মদ সিরাজকে তো স্টাম্প মাইক্রোফোনে বলতে শোনা যায়, “এটা ১০ ওভার পুরনো বল মনে হচ্ছে? সত্যি সত্যি?” শরফুদ্দৌলা অনুরোধ করেন তাড়াতাড়ি বল করতে যাওয়ার জন্য। সিরাজ রান-আপ শুরু করতে যাবেন, এমন সময় আকাশদীপ এগিয়ে এসে আবার বলের পালিশ দেখান। ভারতীয় ক্রিকেটারদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল, এই বলে একেবারে সন্তুষ্ট নন তাঁরা। কিন্তু আম্পায়ার কোনও কথা শোনেননি।

সেই বলেও বেশি ক্ষণ খেলা হয়নি। আট ওভার পর আবার আম্পায়ারের কাছে অভিযোগ করে ভারতীয় দল। দেখেন, বল আকারে বড় হয়ে গিয়েছে। বল পরীক্ষা করার ‘রিং’-এর মধ্যে ঢুকছে না। ফলে আবার বল বদলানো হয়। রুটের মনে হয়েছে, ইচ্ছা করে খেলার গতি কমানোর জন্য এ সব করেছে ভারত। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “বার বার আপনি বল নিয়ে অভিযোগ করতে পারেন না। এতে খেলার গতি কমে যায়। বল নিয়ে বিতর্ক এত বাড়ানোর কিছু নেই। দুই দলকেই তো বল করতে হচ্ছে। আমার মনে হয় এটা সময় নষ্ট করার অজুহাত। ওদের খেলার দিকে বেশি মন দেওয়া উচিত।”

রটের মতে, টেস্টে ডিআরএস-এর পদ্ধতি অনুসরণ করে বল সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। টেস্টে প্রতি ইনিংসে তিনটে করে রিভিউ থাকে দু’দলের কাছে। রুট বলেন, “আমার মনে হয় প্রতি ৮০ ওভারে বোলিং দলের কাছে তিন বার চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ থাকা উচিত। যদি বল নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকে তা হলে তিন বার আম্পায়ারকে জানানো যাবে। অভিযোগ ঠিক হলে বল বদলানো হবে। কিন্তু তিন বারের বেশি অভিযোগ করা যাবে না। এটা করলে এই সমস্যা অনেকটাই মিটবে। শুধু নির্মাতাদের দায়ী করাটা ঠিক নয়।”

বল নিয়ে বিতর্কের মাঝে সাফাই দিয়েছে ডিউক। বলের নির্মাতা সংস্থার মালিক দিলীপ জাজোদিয়া সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “ক্রিকেট বল বানানো খুব একটা সহজ কাজ নয়। তা হলে সকলেই বানাতে পারত। বিশ্বক্রিকেটে মাত্র তিনটে স্বীকৃত সংস্থা রয়েছে যারা বল বানায়। কোকাবুরা, এসজি এবং আমরা। বল বানানো সহজ কাজ হলে শয়ে শয়ে সংস্থা এই কাজ করত।” পাশাপাশি তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, বলের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছেন। দিলীপ বলেন, “ক্রিকেটারদের বোঝা উচিত, আমরা হাত-পা গুটিয়ে বসে নেই। চুপচাপ বসে বসে পা দুলিয়ে সিগার খাচ্ছি না। আপ্রাণ চেষ্টা করছি ভাল বল বানানোর।” তার পরেও যে বিতর্ক কমছে না, তা দু’দলের ক্রিকেটারদের কথা থেকেই পরিষ্কার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.