আইপিএলের পর কয়েক দিনের বিশ্রাম। তার পরই ভারতীয় দল যাবে ইংল্যান্ড সফরে। পাঁচটি টেস্টের সিরিজ় খেলার কথা রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের। শোনা যাচ্ছিল, ফর্মে না থাকা রোহিত ইংল্যান্ড সফরে নাও যেতে পারে। সেই জল্পনা খারিজ করে দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)।
ফিট থাকলে আগামী ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবেন রোহিতই। ওপেনার হিসাবেই বিবেচনা করা হবে তাঁকে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এমনই জানিয়েছে। ইংল্যান্ড সফরের দল মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘোষণা করা হতে পারে। গত অস্ট্রেলিয়া সফরে ১৭ জনের দল পাঠিয়ে ছিল বিসিসিআই। ইংল্যান্ড সফরের দলে থাকতে পারেন ১৫ বা ১৬ জন ক্রিকেটার। একই সময়ে ইংল্যান্ডে থাকবে ভারত ‘এ’ বা দ্বিতীয় দল। প্রয়োজন হলে সেই দল থেকে মূল দলে ক্রিকেটারদের ডেকে নেওয়া হবে।
পিটিআই জানাচ্ছে, ভারতীয় দলে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে পারে। বিশেষ করে মিডল অর্ডারে রদবদলের ভাবনা রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় ব্যর্থতার পর ব্যাটিং অর্ডারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন বোর্ড কর্তারা। ব্যাটার হিসাবে রোহিত, কোহলি ছাড়া যশস্বী জয়সওয়াল, লোকেশ রাহুল এবং শুভমন গিলের দলে থাকা নিশ্চিত। অলরাউন্ডার হিসাবে জায়গা পাকা নীতীশ কুমার রেড্ডির। আরও দু’টি জায়গার জন্য লড়াইয়ে আছেন ছ’জন। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্সকে।
বোর্ডের বিবেচনায় রয়েছেন সাই সুদর্শন, শ্রেয়স আয়ার, রজত পাটিদার, করুণ নায়ার, দেবদত্ত পাড়িক্কল এবং সরফরাজ খান। সুদর্শন ২৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে সাতটি শতরান করেছেন। আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সের হয়ে বেশ ভাল খেলছেন বাঁহাতি ওপেনার। ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েও ভাল পারফর্ম করেছিলেন। ভারতের টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার অন্যতম দাবিদার তিনি।
লাল বলের ক্রিকেটে বেশ উন্নতি করেছেন শ্রেয়স। রঞ্জি ট্রফিতে মুম্বইয়ের হয়ে ভাল খেলেছেন। সাদা বলের ক্রিকেটে চেনা ফর্মে রয়েছেন। খাটো লেংথের বল খেলতে দক্ষ শ্রেয়সের রয়েছে ১৪টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। ২০২২ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতেও টেস্ট খেলেছেন। বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফিরে আসা মিডল অর্ডার ব্যাটারকে নিয়ে ভাবছেন অজিত আগরকরেরা।
রঞ্জি ট্রফিতে প্রায় ৪৫০ রান করা পাটিদারও আছেন লড়াইয়ে। যদিও ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে সাফল্য পাননি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ফর্মে ফিরে লড়াইয়ে চলে এসেছেন তিনি। টেস্ট দলে ঢোকার দাবিদার করুণও। বীরেন্দ্র সহবাগ ছাড়া টেস্টে এক মাত্র ভারতীয় হিসাবে তাঁর তিনশো রানের ইনিংস রয়েছে। তিন ফরম্যাটের ঘরোয়া ক্রিকেটেই ধারাবাহিক ভাবে রান করেছেন। সব মিলিয়ে ৮৫০-এর বেশি রান করেছেন তিনি ঘরোয়া মরসুমে। জাতীয় নির্বাচকদের আলোচনায় ভীষণ ভাবে রয়েছেন করুণ।
রোহিতের অনুপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট অভিষেক হয়েছিল পাড়িক্কলের। আইপিএলে ভাল ফর্মে আছেন। তিনিও নির্বাচকদের নজরে রয়েছেন। লড়াইয়ে থাকবেন সরফরাজও। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে ১৫০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া সফরে খেলার সুযোগ পাননি। বার বার ভুল শট নির্বাচন তাঁর বিরুদ্ধে যেতে পারে। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর রেকর্ড বেশ ভাল। লাল বলের ব্যাটার হিসাবেই পরিচিত মুম্বইয়ের ব্যাটার। তাঁর কথাও ভাবছেন আগরকরেরা।
অস্ট্রেলিয়া সফরে বিপর্যয়ের পর টেস্ট দলের ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে এখনও থেকেই ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন জাতীয় নির্বাচক এবং বোর্ড কর্তারা। জসপ্রীত বুমরাহ এবং মহম্মদ শামি ফিট হয়ে যাওয়ায় বোলিং বিভাগ নিয়ে তেমন উদ্বেগ নেই তাঁদের।