RG Kar, Sex racket , জাল ওষুধ? মাদক চক্র? যৌন চক্র? রক্তের কালোবাজারি? কোনো বড় দুর্নীতি? কি জেনে ফেলেছিলেন তিলোত্তমা? সেটাই কি কাল হল?

হাসপাতালে
জাল ওষুধ আসছে। আর সেই ওষুধ দিনের পর দিন নির্দ্বিধায় রোগীদের দেওয়া হচ্ছে। সেটাই কি জেনে ফেলেছিল চিকিৎসক তরুণী? মেডিকেলের বর্জ্য থেকে সিরিঞ্জ, রক্তের পাউচ সহ নানা জিনিস বিক্রি, রক্তের কালো বাজারি ধরে ফেলেছিল সে? মেডিকেল বর্জ্য থেকে রাসায়নিক আলাদা করে মাদক কারবারের কাজে লাগানোর চক্রর কথা চলছে জেনে ফেলেছিল কি? নাকি হোস্টেলে, ক্লাসরুমে যৌনচক্রের প্রতিবাদ করেছিল? ঠিক কি জেনে ফেলেছিল ওই চিকিৎসক তরুণী? এই প্রশ্নই এখন উঠছে হাসপাতালের আনাচে কানাচে। সেই জন্যই কি তাঁকে এই নৃশংস ভাবে খুন হতে হলো?

শোনা যাচ্ছে, যারা মৃতদেহ দেখেছেন, তারা বলেছেন এটা নারকীয় অত্যাচারের উদাহরণ। যেভাবে মারা হয়েছে, যে অত্যাচার করা হয়েছে সেটা কারোর উপর তীব্র রাগের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু কেন এত রাগ ওই তরুণী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে? সেই প্রশ্ন উঠেছে।

এক্ষেত্রে বহু বছর আগে সৌমিত্র বিশ্বাস নামে এক পড়ুয়ার আর জি করের হোস্টেল থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার প্রসঙ্গ উঠে আসছে। চিকিৎসকদের দাবি, তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখে আত্মহত্যা ধরে নিয়ে তদন্ত চালিয়েছিল পুলিশ, কিন্তু সৌমিত্রের পরিবার খুনের অভিযোগ দায়ের করে। কলকাতা হাইকোর্ট সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল এই মামলায় বেশ কয়েকটি দিক খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। চিকিৎসকদের দাবির মূল দিকটি ছিল হাসপাতালের মধ্যে যৌন চক্র চলা। ওই ছাত্র সেই বিষয়টি জেনে ফেলা ও প্রতিবাদ করায় তাঁকে শেষ হয়ে যেতে হয়েছিল।

চিকিৎসকদের অনেকেরই প্রশ্ন, এই তরুণীও এমনই কোনও চক্রের খপ্পরে পড়েছিলেন কিনা? হাসপাতালে আন্দোলনরত কেউ কেউ বলছেন, সন্দেহ হওয়ার মতো প্রচুর ঘটনা রয়েছে। যা এই মুহূর্তে সামনে আসছে না। চিকিৎসকের দাবি, সৌমিত্রের ঘটনার পরেও হাসপাতালে যৌনচক্র চালানো বন্ধ হয়নি। বহু ছাত্র-ছাত্রী কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এই তরুণীয় তেমনই কোনও কিছুর শিকার হয়েছিলেন কিনা তা দেখা দরকার।

তরুণীর এক সহপাঠী চিকিৎসক পড়ুয়ার দাবি, মাস কয়েক আগে হাসপাতালের গেটে ওকে একটা মোটর বাইক ধাক্কা মারে। কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কিছু হয়নি। উল্টে জানা যায়, মোটর বাইক চালক কর্তৃপক্ষের অত্যন্ত আস্থাভাজন। কিন্তু এই ঘটনা এবং তাতে কোনও পদক্ষেপ না হওয়া আদতে ছিল ওকে ভয় দেখানোর কৌশল। শোনা যাচ্ছে, স্বাস্থ্য ভাবনে অভিযোগও জানিয়েছিল ওই তরুণী চিকিৎসক, কিন্তু কাজ না হওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সব ফাঁস করে দেওয়ার ভাবনা-চিন্তা চলছিল ওর মধ্যে।

হাসপাতালে শিশুদের জরুরী পরিস্থিতিতে দেওয়া দামি ইনজেকশনের কালোবাজারি অভিযোগ উঠে আসছে। কর্তৃপক্ষের সমস্তটাই নাকি জানা , ইনজেকশন নকল বলে রিপোর্ট পেলেও কিছু করা হচ্ছিল না। তরুণী কি রুখে দাঁড়িয়েছিলেন এর বিরুদ্ধে?

সূত্রের খবর, সম্প্রতি আরজি করে মেডিকেলের বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে একটি টেন্ডার ডাকা হয়েছিল, সেই টেন্ডার পেয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে এক অত্যন্ত প্রভাবশালীর ঘনিষ্ঠ। তবে টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী ব্যবহার হওয়া সিরিঞ্জ, রক্তের পাউচ, অল্প কাজে লাগা কোনও সামগ্রী আদতে যেখানে যাওয়ার কথা সেখানে তার বেশিরভাগটাই যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। তাহলে সেটা যাচ্ছে কোথায়? তরুণীর বন্ধুর দাবি সেটা হয়তো জেনে ফেলায় কাল হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.