না হওয়া ডার্বিতেও বিক্রি হল লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুন পতাকা, লাভের কথা ভাবলেন না ইয়াকুব

যুবভারতীতে ফুটবলের ডার্বি মানেই দুই দলের সমর্থকদের একে অপরের উদ্দেশে স্লোগান। কিন্তু রবিবার দেখা গেল অন্য ছবি। দুই দলের সমর্থকেরা একসঙ্গে স্লোগান দিলেন। বেলেঘাটা থেকে বেঙ্গল কেমিক্যাল পর্যন্ত শোনা গেল, “বাঙাল-ঘটির একটাই স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর।”

খেলা থাকলে যে বেলেঘাটার মোড় খবরের শিরোনামে উঠে আসে মারপিটের জন্য, সেখানেই দুই দলের সমর্থকেরা একসঙ্গে পতাকা হাতে স্লোগান দিলেন, গান গাইলেন, কখনও বসে পড়লেন রাস্তায়। খেলার দিনে বেলেঘাটায় এমন সৌভ্রাতৃত্বের ছবি কবে দেখা গিয়েছে, বা আদৌ কখনও দেখা গিয়েছে কি না তা মনে করতে পারলেন না ১০ বছর বয়স থেকে ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখতে আসা স্বপ্নদীপ দাশগুপ্ত।

সব ছবি আলাদা হলেও একটি ছিল পরিচিত। পার্ক সার্কাসের মহম্মদ ইয়াকুব রবিবারও এসেছিলেন যুবভারতীতে। তাঁর ব্যাগ ভর্তি লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুন পতাকা। ছিল দুই দলের জার্সিও। যুবভারতীতে খেলা থাকলে তিনি আসেন জার্সি, পতাকা, ফেট্টি বিক্রি করতে। আরজি করের আবহে ডুরান্ড কাপে ডার্বি বন্ধের খবরে মন খারাপ ছিল তাঁর। বললেন, “ভেবেছিলাম কিছু বিক্রি হবে না। তা-ও এসেছিলাম। যদি কিছু হয়।”

fans

বিক্রি হল। ডার্বি না হলেও যে সমর্থকেরা প্রতিবাদ জানাতে যুবভারতীর সামনে জড়ো হয়েছিলেন তাঁরাই কিনলেন। তবে খেলার দিন ইয়াকুব যে জার্সি ২০০ টাকায় বিক্রি করেন, রবিবার সেই জার্সি বিক্রি করলেন ১৫০ টাকায়। দাম কম পতাকারও। ইয়াকুব বললেন, “কম দামেই ছেড়ে দিচ্ছি। লাভের কথা ভাবছি না। তবে খেলাটা হলে ভাল লাগত।”

বিকেল থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে যুবভারতীর সামনে। পুলিশ প্রথমে সকলকে সরিয়ে নিয়ে যায় কাদাপাড়া ক্রসিংয়ে। পরে সেখান থেকে লাঠিচার্জ করে পুলিশ দুই দলের সমর্থকদের সরিয়ে দেয় বেঙ্গল কেমিক্যালের দিকে। সেই ভিড়ে লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুন পতাকার সঙ্গে জুড়ে যায় মহমেডান পতাকাও। রবিবার অবশ্য ইয়াকুব বুঝতে পারলেন না তাঁর থেকে লাল-হলুদ পতাকা কোনও মোহনবাগান সমর্থক কিনলেন কি না। কারণ গোটা প্রতিবাদ মিছিলেই দুই দলের সমর্থকেরা একে অপরকে কোলে তুলে নিলেন, হাতে নিলেন ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’র পতাকাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.