পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ ও খুন: ফাঁসির সাজা খারিজ কলকাতা হাই কোর্টে, পরিবর্তে ৬০ বছরের কারাবাসের নির্দেশ

পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দুই ব্যক্তির ফাঁসির সাজা মকুব করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের মৃত্যুদণ্ড খারিজ করে ৬০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

২০২১ সালের ৭ নভেম্বর ঝাড়গ্রামে ৫ বছরের একটি শিশুকন্যাকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দোষীরা। প্রথমে বাঁশের কাঠি দিয়ে যৌন নির্যাতন চালানো হয়। পরে শিশুটিকে গলা টিপে খুন করে দেহ মাঠের পাশে একটি ঝোপে ফেলে দেওয়া হয়।

দীর্ঘক্ষণ নিখোঁজ থাকায় মেয়েটির বাবা এবং আত্মীয়েরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। সেই সময় গ্রামে কয়েক জন জানান, তাঁরা মেয়েটিকে দু’জনের সঙ্গে দেখেছেন। একটি দোকান থেকে তাঁরা মেয়েটিকে চকোলেট কিনে দিয়েছিলেন এবং নিজেরা বিড়ি কিনেছিলেন। এর পরেই ওই দুই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের জেরা করে উদ্ধার হয় মেয়েটির দেহও। এক জনের বাড়ি থেকে মেয়েটির একটি ছবি আর একটি লকেট উদ্ধার হয়। সেই মামলাতেই ওই দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় নিম্ন আদালত।

নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে মামলা করেছিল দোষীরা। সেই মামলায় বুধবার রায় ঘোষণা করে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, দোষীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ যথেষ্ট শক্তিশালী। মেডিক্যাল রিপোর্টে প্রমাণিত, মেয়েটিকে বর্বর ভাবে যৌন নির্যাতন করে খুন করা হয়েছিল। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আগে দেখতে হয়, দোষীদের সংশোধনের সুযোগ রয়েছে কি না।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্তেরা খুবই গরিব, নিরক্ষর এবং এক জন মানসিক ভাবে অসুস্থ। অন্য জনেরও মানসিক চিকিৎসা চলছে। পূর্ব অপরাধের কোনও রেকর্ডও নেই তাদের নামে। তারা জেলে ভাল ব্যবহার করছে এবং সংশোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।

সব দিক বিবেচনা করে আদালত মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে। দু’জনকেই ৬০ বছরের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই সময়ের আগে কোনও ভাবে মুক্তি বা রেহাই পাবে না তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.