ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ওয়াশিংটন-মস্কো টানাপড়েনের মধ্যেই আমেরিকার সঙ্গে প্লুটোনিয়াম চুক্তি বাতিল করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ঘটনাচক্রে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার উপকূলের অদূরেই পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম ডুবোজাহাজ মোতায়েনের কথা ‘মনে করানোর’ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই বার্তা এল পুতিনের তরফে।
আমেরিকা-রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র প্রসাররোধের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ২০১০ সালে স্বাক্ষরিত এই সংশোধিত চুক্তি (২০০০ সালে প্রথম প্লুটোনিয়াম সমঝোতা হয়েছিল দু’দেশের)। সোমবার পুতিন প্লুটোনিয়াম নিষ্কাশন এবং মজুত সংক্রান্ত ওই চুক্তি বাতিলের নির্দেশনামায় সই করেছেন বলে রুশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য মস্কো টাইমস’ জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, আমেরিকায় প্রায় ৯০ টন অস্ত্রনির্মাণে সক্ষম প্লুটোনিয়াম রয়েছে। রাশিয়ার রয়েছে ১২৮ টন।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আমেরিকা ৬০ টন প্লুটোনিয়াম ‘অতিরিক্ত’ করেছে ঘোষণা করেছিল। রাশিয়া করেছিল ৫০ টন। উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছিল যে তারা পর্যায়ক্রমে ৩৪ টন করে মজুত প্লুটোনিয়াম নষ্ট করে ফেলবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় এ বার জল ঢেলে দিলেন পুতিন। প্রসঙ্গত, ট্রাম্প গত সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে একটি শান্তি বৈঠকের পরিকল্পনা বাতিল করে তাকে ‘সময়ের অপচয়’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার বার্তা না দিলে বৈঠক করা অর্থহীন।
এর পরে রবিবার পুতিন জানান, তাঁরা পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম ‘বুরেভেস্টনিক’ ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রের সফল ভাবে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছেন। মস্কোর দাবি, যে কোনও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে ‘বুরেভেস্টনিক’ ১৪ হাজার কিলোমিটারের (৮,৭০০ মাইল) দূরত্ব পাড়ি দিয়েছে বলে দাবি মস্কোর। রাশিয়ার এই দাবির পরই সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে তিনি জানান, আমেরিকার এত দূরপাল্লায় পা়ড়ি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, রাশিয়ার উপকূলের কাছেই তাঁদের পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম ডুবোজাহাজ রয়েছে। তার পরেই চুক্তি বাতিলের বার্তা দিল মস্কো।

