ট্রেনের চেন টানা, না কি আগুনের গুজব! জলগাঁওয়ে কেন লাইনে নেমে দাঁড়ান যাত্রীরা?

পুষ্পক এক্সপ্রেস থেকে হুড়মুড়িয়ে পাশের লাইনে নেমে গিয়েছিলেন যাত্রীরা। সে সময় তাঁদের চাপা দিয়ে চলে যায় অন্য কর্নাটক এক্সপ্রেস। মহারাষ্ট্রের জলগাঁওয়ে এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। আহত অন্তত পাঁচ জন। কিন্তু কেন হঠাৎ ট্রেন থেকে নেমে পাশের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই যাত্রীরা, যার জন্য এই বিপত্তি? জলগাঁওয়ের জেলাশাসক আয়ুষ প্রসাদ একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ট্রেনে আগুন লেগেছে বলে গুজব ছড়িয়েছিল। সে কারণে হয়তো প্রাণ বাঁচানোর জন্য চেন টেনে ট্রেন থামিয়ে পাশের লাইনে নেমে পড়েছিলেন কয়েক জন যাত্রী। যদিও আগুন লাগার গুজব সত্যিই ছড়িয়েছিল কি না, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারা যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। রেলের একটি সূত্র অন্য কথা বলছে। মৃতদের পরিবারের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস।

একটি সংবাদ মাধ্যমের দাবি, পরধাড়ে স্টেশনের কাছে পুষ্পক এক্সপ্রেসে ভুয়ো ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠে। যাত্রীরা তাতেই মনে করে বসেন যে, ট্রেনে আগুন লেগেছে। যদিও রেলের একটি সূত্র বলছে, জলগাঁও থেকে বহু যাত্রী পুষ্পক এক্সপ্রেসে চেপেছিলেন। ঘটনাস্থলের কাছে এসে কয়েক জন যাত্রী ট্রেনের চেন টানেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, ট্রেন থামিয়ে সেখানে নেমে যাবেন। চেন টেনে ট্রেন থেকে নামার পরে লাইন পেরোনোর সময় ওই যাত্রীদের চাপা দিয়ে যায় কর্নাটক এক্সপ্রেস। এমনটাই দাবি করেছে রেলের একটি সূত্র। যদিও মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীস একটি ভিডিয়োবার্তায় বলেছেন, ‘‘কয়েক জন যাত্রী ভেবেছিলেন ট্রেন থেকে ধোঁয়া বার হচ্ছে। তাই তাঁরা ঝাঁপ দেন পাশের লাইনে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তখন তাঁদের চাপা দেয় অন্য একটি ট্রেন।’’ মহারাষ্ট্রের মু্খ্যমন্ত্রী এখন দাভোসে ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’-এর সম্মেলনে রয়েছেন। সেখান থেকেই মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আহতদের চিকিৎসার ভারও তাঁর সরকার নেবে বলে জানিয়েছেন। ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

জলগাঁওয়ের পরধা়ড়ে স্টেশনের কাছে দু্র্ঘটনা হয়েছে। জলগাঁওয়ের জেলাশাসক আয়ুষ জানিয়েছেন, দু’টি ট্রেন একে অপরের পাশ দিয়ে চলছিল। তখনই পুষ্পক এক্সপ্রেস থেকে নেমে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের চাপা দেয় কর্নাটক এক্সপ্রেস। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জন মারা গিয়েছেন। আয়ুষ বলেন, ‘‘আগুন লেগেছিল বলে গুজব ছড়িয়েছিল। কিন্তু সেই নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারা যায়নি। তিনটি হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা চলছে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.