পাকিস্তানের শাহবাজ় শরিফের সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামলেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জনতা। মুজফ্ফরাবাদে জনতা-পুলিশ ও সোনাবাহিনীর সংঘর্ষে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। সেখানকার নাগরিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে তৈরি হওয়া আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি (এএসি) এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছে। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
মোট ৩৮ দফা দাবিতে চলছে বিক্ষোভ। এই দাবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য শাসনতান্ত্রিক সংস্কার, কাশ্মীরের শরণার্থীদের জন্য পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আইনসভায় যে ১২টি আসন নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তার অবলুপ্তি ঘটানো ইত্যাদি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পাক সরকার দীর্ঘ দিন ধরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উন্নতির বিষয়ে উদাসীন। এই প্রসঙ্গে আন্দোলনকারীদের এক জন বলেন, “আমাদের লড়াই কোনও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নয়। আমারা চাই গত ৭০ বছর ধরে আমাদের যে ভাবে মৌলিক অধিকারগুলি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, তা বন্ধ করা হোক।’’
পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বড় শহরগুলিতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। শনিবার এবং রবিবার পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢোকা এবং বেরোনোর পথে নজরদারি চালানো হয়। সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলির সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাঁট করা হয়েছে। ইসলামাবাদ থেকে অতিরিক্ত এক হাজার জন পুলিশকর্মীকে পাঠানো হয়েছে সেখানে।
প্রসঙ্গত, নিজেদের দখল করে রাখা কাশ্মীরকে ‘আজাদ কাশ্মীর’ বলে থাকে পাকিস্তান। চলতি মাসে মরক্কো সফরে গিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে মুখ খুলেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি বলেছিলেন, “পাঁচ বছর আগে আমি কাশ্মীর উপত্যকায় ভারতীয় সেনার এক অনুষ্ঠানে বলেছিলাম পাক অধিকৃত কাশ্মীর দখল করতে আমাদের আক্রমণ করার প্রয়োজন নেই। ওটা এমনিতেই আমাদের হবে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরও বলবে, আমরা ভারতের অংশ। সেই দিন আসতে চলেছে।”
এর আগে একাধিক বার পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি। কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির একাধিক নেতা-মন্ত্রীকেও বলতে শোনা গিয়েছে যে, খুব শীঘ্রই পাকিস্তানের দখল করে রাখা কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে এই দাবি আরও জোরালো হয়। গত বছর এই প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও বলেছিলেন, ‘‘পিওকে কখনই ভারতের বাইরের অংশ ছিল না। সেটি এই দেশের অংশ। ভারতীয় সংসদের একটি রেজ়োলিউশন রয়েছে, যাতে বলা আছে, পিওকে ভারতেরই অংশ। এখন অন্যের কাছে পিওকের নিয়ন্ত্রণ কী করে গেল, তা আলোচনার বিষয়।”