উত্তপ্ত আরজি কর, ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে অভিযুক্তদের তাড়া করলেন প্রতিবাদীরা, ধাক্কাধাক্কি, ছিঁড়ল জামাও

‘হুমকি সংস্কৃতি’ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। অভিযুক্তদের তাড়া করলেন প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তারেরা। ধাক্কাধাক্কিতে এক জনের জামা ছিঁড়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ। অভিযুক্তেরা হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবন থেকে বেরিয়ে কোনও রকমে বাইরে যেতে পেরেছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা তাঁদের নিরাপত্তায় ছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ধাক্কাধাক্কি হয় হাসপাতাল চত্বরে। আগে থেকেই সেখানে ভিড় করে ছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। অভিযুক্তেরা বেরিয়ে এলে তাঁদের তাড়া করা হয়। রীতিমতো দৌড়ে সেখান থেকে পালাতে হয়েছে একাধিক অভিযুক্তকে।

জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, আরজি করে ‘হুমকি সংস্কৃতি’ চালিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতেন একাধিক চিকিৎসক। সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি তদন্ত শুরু করে। জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগের ভিত্তিতে চিহ্নিত করা হয়েছে ৫১ জনকে। তাঁদের মধ্যে চিকিৎসক ছাড়াও রয়েছেন হাউসস্টাফ, ইন্টার্নেরা। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে বুধবার তলব করা হয়েছিল। তাঁরা প্রশাসনিক ভবনে (যেখানে অধ্যক্ষের দফতর রয়েছে) হাজিরা দেন। হাসপাতালে তাঁদের ঢুকতে দেখেই জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। সকাল থেকেই তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন।

বুধবার রাতে তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর চেষ্টা করেন অভিযুক্তেরা। কিন্তু পরিস্থিতি তত ক্ষণে যথেষ্ট উত্তপ্ত হয়ে পড়েছিল। আগে থেকেই বিক্ষুব্ধ জুনিয়র ডাক্তারেরা বাইরে ভিড় করেছিলেন। হাসপাতালের প্ল্যাটিনাম জুবিলি ভবন থেকে ছ’নম্বর গেট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্তেরা। কিন্তু সেখান থেকে তাঁদের পিছনে ধাওয়া করেন বিক্ষোভকারীরা। সঙ্গে চলে লাগাতার স্লোগান। ‘চোর চোর’ স্লোগানও ওঠে অভিযুক্তদের উদ্দেশে। সিআইএসএফ জওয়ানেরা নিরাপত্তা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বার করে দেন অভিযুক্তদের।

তার মাঝেও ধাক্কাধাক্কি হয়। জওয়ানদের সরিয়ে কেউ কেউ অভিযুক্তদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কোনও কোনও অভিযুক্তের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। এক অভিযুক্তের জামা ছিঁড়ে গিয়েছে বেরোনোর সময়ে ধাক্কাধাক্কিতে। যদিও বিক্ষোভরত জুনিয়র ডাক্তারেরা জানান, তাঁরা কাউকে মারধর করেননি। কেবল স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।

বিক্ষোভকারী জুনিয়র ডাক্তার অনুভব মণ্ডল বলেন, ‘‘এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে এই হাসপাতালে। ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁরা সকালে হাসতে হাসতে তদন্ত কমিটিতে ঢুকেছেন। এত স্পর্ধা এখনও কী করে এঁদের হচ্ছে? আমরা জানতে চাই।’’ অভিযুক্তদের গায়ে কেউ হাত তোলেননি বলে দাবি করেছেন অনুভব। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাইরে বেরিয়ে ওঁরা নিজেরাই নিজেদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে আমাদের দোষ দিচ্ছেন। এই নাটক কেন করা হচ্ছে? কার ভরসায় এখনও ওঁদের এই বাড়বাড়ন্ত?’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.