দুই লক্ষ্যে বুধবার পঞ্চদেশীয় সফরে বেরোচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, তালিকায় কোন কোন দেশ, কী জানাল বিদেশ মন্ত্রক?

পঞ্চদেশীয় সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার ঘানার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। তার পর যথাক্রমে যাবেন ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, আর্জেন্টিনা, ব্রাজ়িল এবং নামিবিয়ায়। ৬ ও ৭ জুলাই ব্রাজ়িলের রিও ডি জেনেইরোতে ব্রিকস সম্মেলনেও যোগ দেবেন তিনি। এখনও পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণাঙ্গ সফরসূচি প্রকাশ্যে না-এলেও কেন্দ্রের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দু’টি লক্ষ্য মাথায় রেখে পঞ্চদেশীয় সফরে বেরোচ্ছেন মোদী।

দুই লক্ষ্যের একটি হল সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বাকি দেশগুলিকে একজোট করে সম্মিলিত বার্তা দেওয়া। দুই, আর্জেন্টিনা, ব্রাজ়িল কিংবা নামিবিয়ার মতো দেশগুলি থেকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের জোগান নিশ্চিত করা। পহেলগাঁও কাণ্ডের পরই পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানাতে বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল ভারত। এ বার এই বিষয়টি ব্রিকস সম্মেলনেও তুলতে চাইছে নয়াদিল্লি। নয়াদিল্লি আশাবাদী যে, তাদের কূটনৈতিক দৌত্যের কারণে সম্মেলনের যৌথ ঘোষণাপত্রে পহেলগাঁও কাণ্ডের নিন্দা এবং সন্ত্রাসবাদ বিরুদ্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপের কথা বলা হবে। এই প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (অর্থনৈতিক সম্পর্ক) দাম্মু রবি জানান, নয়াদিল্লি আশাবাদী যে, ব্রাজ়িলের সভাপতিত্বে ব্রিকস সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারতের সম্মিলিত পদক্ষেপ সংক্রান্ত বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার প্রশ্নে ব্রিকস-এর অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ভারতের কোনও মতপার্থক্য নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

নামিবিয়া, আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজ়িল— এই তিন দেশেই রয়েছে লিথিয়াম, গ্রাফাইটের মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজের বিপুল ভান্ডার। এই তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে দেখা করে ওই খনিজগুলির জোগান নিশ্চিত করার বিষয়ে কথা বলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। তা ছাড়া প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রেও ব্রাজ়িলের সঙ্গে আরও বোঝাপড়া নিবিড় করতে পারে ভারত। বিপুল পরিমাণ সোনা আমদানির জন্য ঘানার উপর নির্ভরশীল ভারত। আফ্রিকা মহাদেশের এই দেশে প্রায় তিন দশক পরে যাচ্ছেন কোনও প্রধানমন্ত্রী। এই সফরে ঘানার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক ঘাটতি (ভারতের সাপেক্ষে যখন আমদানিজাত দ্রব্যের অর্থমূল্য রফতানিজাত দ্রব্যের চেয়ে বেশি হয়) কমাতে সে দেশে নতুন কোনও বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে খবর, মোদীর এই সফরে বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে তেল, গ্যাস, অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়েও আলোচনা হবে।

গত সপ্তাহেই পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের উল্লেখ না-থাকায় চিন প্রভাবিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশনের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেনি ভারত। ঘটনাচক্রে, চিন ব্রিকস গোষ্ঠীর সদস্যও বটে। তা ছাড়া এই গোষ্ঠীর অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলি হল ভারত, ব্রাজ়িল, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং স‌ংযুক্ত আরব আমিরশাহি। অবশ্য আগেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না। আগামী বছর এই সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবে ভারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.