চাপ বাড়ল আরসিবি-র, পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় লিখিত জবাব চাইল ক্রিকেট বোর্ড

চাপ আরও বাড়ল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) উপর। আইপিএলের ট্রফিজয়ের উৎসবের সময় চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় আরসিবি-র কাছে লিখিত জবাব চাইল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। বিরাট কোহলিদের দলকে সেই নির্দেশ দিয়েছেন বোর্ডের অম্বুডসম্যান তথা এথিক্স অফিসার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণ মিশ্র। লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থাকেও।

আরসিবি ও কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন আইপিএস অফিসার বিকাশ কুমার। তার ভিত্তিতে এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। আরসিবি ও কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থাকে চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তাদের কতটা দায় রয়েছে তা খতিয়ে দেখতে চাইছেন বোর্ডের অম্বুডসম্যান।

বিচারপতি মিশ্র যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতে লেখা, “ঘটনার গুরুত্ব দেখে আরসিবি ও কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে অভিযোগের জবাব লিখিত আকারে জমা দিতে হবে। অভিযোগে বলা হয়েছে, আরসিবি ও কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার গাফিলতিতেই ওই ঘটনা ঘটেছে। তাতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। তাই বিষয়টা খতিয়ে দেখতে হবে।”

এর আগে ‘সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল’ (ক্যাট) প্রাথমিক রিপোর্টে এই ঘটনার জন্য আরসিবি-কে দায়ী করেছে। ট্রাইবুনাল তাদের প্রাথমিক রিপোর্টে বলেছে, “প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে, তিন থেকে পাঁচ লক্ষ মানুষের জমায়েতের পুরো দায় আরসিবি-র। তারা পুলিশের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেয়নি। হঠাৎ করে সমাজমাধ্যমে এই উৎসবের কথা ঘোষণা করে দিয়েছিল তারা। তার ফলে এত ভিড় হয়েছিল।

একেবারে শেষ মুহূর্তে আরসিবি-র এই উৎসবের ঘোষণাকে উপদ্রবের সঙ্গে তুলনা করেছে ট্রাইবুনাল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “হঠাৎ করে কারও অনুমতি ছাড়া একটা উপদ্রব সৃষ্টি করেছে আরসিবি। এত কম সময়ে, মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের পক্ষে সব বন্দোবস্ত করা কোনও ভাবেই সম্ভব ছিল না।” ট্রাইবুনাল আরও বলেছে, “পুলিশকর্মীরাও তো মানুষ। তারা তো ইশ্বর বা জাদুকর নন। আলাদিনের মতো প্রদীপ ঘষে কারও মনোকামনা পূর্ণ করার মতো শক্তিও তাদের নেই। পুলিশকে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার মতো কোনও সময়ই দেওয়া হয়নি।”

আইপিএলের ১৮তম বছরে প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বেঙ্গালুরু। ৩ জুন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেই কোহলি জানিয়েছিলেন, ৪ জুন বেঙ্গালুরুতে উৎসব হবে। সে দিন সকাল থেকে বেঙ্গালুরুর রাস্তায় ভিড় জমেছিল। বিশেষ করে বিধান সৌধ ও চিন্নাস্বামীর বাইরে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল। চিন্নাস্বামীর বাইরে হঠাৎ বিশৃঙ্খলা হয়। তখনই পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন বহু।

এই ঘটনার পর আরসিবি, কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থা ও সে রাজ্যের সরকার একে অপরের উপর দোষ চাপিয়েছেন। আরসিবি-র কয়েক জন শীর্ষকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। তার মধ্যেই কর্তব্যে গাফিলতির জন্য কয়েক জন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ট্রাইবুনালে আবেদন করেছিলেন এক পুলিশকর্মী। তাঁরই আবেদনের শুনানিতে কোহলিদের দলের উপর দায় চাপিয়েছে ট্রাইবুনাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.