মরণোত্তর পদ্মভূষণ পঙ্কজ উদাস, সুশীল মোদীকে, ১৩৯ জন পদ্মসম্মানের তালিকায় আর কারা

স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা ছিল তাঁর। গোয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম মুখও তিনি। বয়স এখন তাঁর ১০০ ছাড়িয়েছে। এ বছর সেই শতায়ু স্বাধীনতা সংগ্রামীকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হচ্ছে। পদ্মশ্রী প্রাপকদের তালিকায় রয়েছে এক বাঙালি মুখও। এ ছাড়া খেলোয়াড়, চিকিৎসক, সঙ্গীতশিল্পী, শিল্পপতি, যোগ অনুশীলনকারী— নানা পেশার মানুষকেই পদ্মসম্মান দেওয়া হবে।

রবিবার সাধারণতন্ত্র দিবস। তার আগে প্রথা মেনে শনিবার এ বছরের পদ্মসম্মান প্রাপকদের নাম ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পদ্মশ্রী ছাড়াও পদ্মবিভূষণ এবং পদ্মভূষণ সম্মানপ্রাপকদের তালিকাও প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। এ বছর মোট ১৩৯ জনকে পদ্মসম্মান দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে পদ্মবিভূষণ পাচ্ছেন ৭ জন। ১৯ জন পাচ্ছেন পদ্মভূষণ সম্মান। পদ্মশ্রী দেওয়া হচ্ছে ১১৩ জনকে।

পদ্মশ্রী প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার রবিচন্দ্রন অশ্বিন, গায়ক অরিজিৎ সিংহ, মমতাশঙ্কর, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ। মরণোত্তোর পদ্মবিভূষণ পাচ্ছেন সঙ্গীতশিল্পী সারদা সিন‌্‌হা, লেখক এমটি বাসুদেবন নায়ের এবং গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি সুজ়ুকির প্রাক্তন কর্তা ওসামু সুজ়ুকি। এ বছর পদ্মভূষণ পাচ্ছেন ভারতের হকি দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক পিআর শ্রীজেশ। এ ছাড়াও মরণোত্তর পদ্মভূষণ সম্মান পাচ্ছেন সঙ্গীত শিল্পী পঙ্কজ উদাস এবং রাজনীতিবিদ সুশীল মোদী।

ঢাক কেবল পুরুষেরাই বাজান! এ হেন প্রাচীনপন্থী ধারণাকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন গোকুলচন্দ্র দে। ৫৭ বছর বয়সি এই ঢাকি ১৫০ জন মহিলাকে দিনরাত প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। শিখিয়েছেন ঢাক বাজানো। যা নিয়ে চর্চা হয়েছে খুবই। শুধু তা-ই নয়, গোকুল একজন আবিষ্কারকও বটে। ঢাকের মতো ভারী বাদ্যযন্ত্রের ধারণাও পাল্টে দিয়েছেন তিনি। অপেক্ষাকৃত কম ওজনের একটি ঢাক তৈরি করে দেশে তো বটেই, বিদেশের মাটিতেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন বাঙালি এই ঢাকি। তাঁকেই এ বছর পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করছে কেন্দ্র।

পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়া হবে স্বাধীনতা সংগ্রামী লিবিয়া লোবো সরদেশাইকে। গোয়ায় পর্তুগিজ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি। পর্তুগিজদের বিরুদ্ধে গোয়াবাসীকে এক করার দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। জঙ্গলের মধ্যে মাটির নীচে একটি রেডিয়ো স্টেশন তৈরি করেছিলেন লিবিয়া। সেই রেডিয়ো স্টেশন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা বলতেন সকলকে।

প্যারিসের গ্রীষ্মকালীন প্যারা অলিম্পিক্সে ২০২৪ সালে সোনা জিতে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন হরিয়ানার তিরন্দাজ হরবিন্দর সিংহ। এ বার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করা হচ্ছে। ৪৮ বছর বয়সি যোগ অনুশীলনকারী শাইখাও সম্মানিত হচ্ছেন পদ্মসম্মানে। কুয়েতে তিনিই প্রথম লাইসেন্সপ্রাপ্ত যোগ স্টুডিয়ো তৈরি করেছিলেন।

এ ছাড়া মরণোত্তর পদ্মসম্মান পাচ্ছেন কলিন গানৎজ়ার। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এবং তাঁর স্বামী হিউ গানৎজ়ার, জুটি বেঁধে ভারতের বিভিন্ন পর্যটন স্থানের কথা লিখেছেন। ৩০টিরও বেশি বই লিখেছেন গানৎজ়ার দম্পতি। ২০২৪ সালে মৃত্যু হয় কলিনের। এ বছর এই দম্পতিকে পদ্মশ্রীতে ভূষিত করছে কেন্দ্র।

পদ্মসম্মানের তালিকায় এক কৃষকও। নাগাল্যান্ডে ফল চাষ করে নজর কেড়েছিলেন এল হ্যাংথিং। তাঁকে এ বার সম্মানিত করা হচ্ছে। এ ছাড়াও, পুদুচেরির যন্ত্রশিল্পী পি দাচানামূর্তি, মরাঠি লেখক মারুতি ভুজাংরাও চিতামপল্লী, মধ্যপ্রদেশের সমাজসেবক স্যালি হোলকার-সহ আরও অনেককে পদ্মসম্মানে ভূষিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.