যাদবপুরের প্রাক্তনী হিন্দোলকে জঙ্গি আফতাবের সঙ্গে তুলনা করল পুলিশ! জামিনের আর্জি খারিজ করে দিল আদালত

দুবাইয়ে বসে আফতাব আনসারি আমেরিকান সেন্টারে বসে হামলার ছক করেছিলেন। তেমনই স্পেনে বসে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর হামলার ছক কষেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী হিন্দোল মজুমদার। শুক্রবার আলিপুর আদালতে এমনই দাবি করে কলকাতা পুলিশ। শেষমেশ হিন্দোলকে আগামী ১৮ অগস্ট, সোমবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত।

গত ১ মার্চ শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু হেনস্থা এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। তাতে নাম জড়ায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী হিন্দোলের। বর্তমানে স্পেনে গবেষণার কাজে যুক্ত ওই যুবক। গত বৃহস্পতিবার স্পেন থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে নামার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কলকাতা থেকে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কিলোমিটার দূরে স্পেনে বসে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর উপর হামলার ছক তৈরি করেন হিন্দোলই। যাদবপুরের পড়ুয়াদের সঙ্গে হোয়াট্‌সঅ্যাপ মারফত হামলার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে দেন তিনি। মঙ্গলবার হিন্দোলকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়।

মঙ্গলবার ধৃত হিন্দোলকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁর আইনজীবী মক্কেলের জামিনের জন্য আবেদন করেন। তবে তা খারিজ করে দেন বিচারক। হিন্দোল প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘‘কলকাতায় আমেরিকান সেন্টারে হামলায় আফতাব আনসারিও সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। দুবাইয়ে বসে ষড়যন্ত্র করেন। তাঁর নির্দেশেই পুরো ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল। পুলিশ ওই ঘটনায় কয়েক জন অভিযুক্তকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করেছিল। তার পরেই বিদেশে বসবাসকারী ওই ঘটনার মূল চক্রী আফতাব আনসারির নাম জানা গিয়েছিল। পরে দুবাই থেকে আফতাব আনসারিকে গ্রেফতার করা হয়।”

অন্য দিকে, হিন্দোলের মায়ের অভিযোগ, ‘‘পুলিশের চিঠি আসার পর হিন্দোলকে বলি, ও যেন মেল করে পুলিশকে। সেগুলো ও সঙ্গে সঙ্গেই করেছিল। চিঠিগুলো যথাযথ জায়গায় পৌঁছেছিল।’’

মহিলার সংযোজন, ‘‘কোনও দিন ভাবতেই পারিনি যে, এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হবে। কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে আমাদের পরিবারের কেউ যুক্ত হয়নি, হবেও না।’’ তিনি আরও বলেন,‘‘এমন কী ক্রিমিনাল ও যে, মাথা ঢেকে কোর্টে আনতে হবে!’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসিতে বি-টেক করেছিলেন হিন্দোল। তার পর তিনি চলে যান স্পেন। হিন্দোলের বাবার অভিযোগ, ‘‘বাড়িতে কোনও সমন আসেনি। লুক আউট নোটিস কেন হল, বুঝতে পারছি না। অভিযোগটা হাস্যকর। যাদবপুরের ছাত্রেরা এত অপরিণত নয় যে, বিদেশ থেকে কেউ কিছু বলল, হয়ে গেল।’’

তবে হিন্দোলের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করা ছিল। সেই কারণে অভিবাসন বিভাগ তাঁকে আটকায় প্রথমে। পরে তাঁকে হেফাজতে নেয় দিল্লি পুলিশ। তার পর কলকাতা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। ঘটনাক্রমে যাদবপুর থানার তদন্তকারী আধিকারিকের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের একটি দল দিল্লি গিয়ে ট্রানজিট রিমান্ডে হিন্দোলকে কলকাতায় আনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.