ছ’মাস আগে দুবাইয়ের যে পিচে ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল, সে রকম পিচ এশিয়া কাপে পাবেন না গৌতম গম্ভীরেরা। এ বারের প্রতিযোগিতায় পিচ ও পরিবেশ আলাদা। খেলতে নামার আগেই খেলার ফয়সালা হয়ে যেতে পারে। এমনটাই জানিয়েছেন পিচ প্রস্তুতকারক টনি হেমিং ও ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার রবিন সিংহ। ভারতকে সতর্ক করেছেন তাঁরা।
এখন দুবাইয়ে তীব্র গরম। সেই কারণেই খেলা শুরুর সময় আরও আধ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট থেকে শুরু খেলা। আয়োজকদের ধারণা, তত ক্ষণে গরম কিছুটা কমবে। ফলে খেলোয়াড়দের সুবিধা হবে। গরমের সময় দুবাইয়ের মাঠের পিচ ও পরিবেশ বদলে যায়। সেই কারণেই সমস্যায় পড়তে পারে ভারত।
‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে টনি জানিয়েছেন, গত দু’বছরে দুবাইয়ের পিচে অনেক বদল এসেছে। বিশেষ করে গরমের সময় সেখানকার পিচ অন্য রকম হয়। টনি বলেন, “পিচে অনেক ঘাস রয়েছে। এখনও তা কাটা হয়নি। যাতে বলের গতি ও বাউন্স ভাল হয় তার জন্যই বেশি ঘাস রাখা হয়েছে। দুবাইয়ে এখন এত গরম যে ঘাস বেশি কেটে ফেললে পিচ ভেঙে যেতে পারে। তাই ঘাস থাকবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময় ভারত যে পিচে খেলেছিল, তা এখন পাবে না ওরা। সেটা বুঝে ওদের পরিকল্পনা করতে হবে।”
সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রাক্তন কোচ রবিন। সেখানকার উইকেট খুব ভাল ভাবে চেনেন তিনি। টনির কথার সঙ্গে রবিনও একমত। তিনি বলেন, “এত গরমে প্রথমে বল করা ভাল। সেই সময় পিচ তাজা থাকবে। ঘাসও থাকবে। দিনের বেলা পিচ ঢাকা থাকবে। ফলে যখন পিচ সরানো হবে তখন তাতে আর্দ্রতা থাকবে বেশি। শুরুতে নতুন বলে সুইং করানোর সম্ভাবনা অনেক বাড়বে। পেসারেরা সুবিধা পাবে। পিচ একটু পুরনো হলে তখন স্পিনারেরা সুবিধা পাবে।”
গরমের কারণে রাতের দিকে শিশির পড়বে। যে হেতু দুবাইয়ের মাঠ সব দিক দিয়ে ঢাকা তাই সেখানে শিশির আরও বেশি হবে। এই শিশির ম্যাচের ভাগ্য ঠিক করে দিতে পারে বলে মনে করেন রবিন। তিনি বলেন, “শিশির খুব বড় ভূমিকা পালন করবে। এই সময় পরে ব্যাট করা ভাল। কারণ, শিশিরের মধ্যে বোলারদের বল ধরতে সমস্যা হয়। গরমের সময় দুবাইয়ে যে সব ম্যাচ হয় সেখানে রান তাড়া করে জেতা অনেক সহজ। সূর্যের টস জেতা খুব জরুরি। নইলে দল মুশকিলে পড়তে পারে।”
টনিও মনে করেন, টসেই খেলার ফয়সালা হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, “টস খুব গুরুত্বপূর্ণ। সব অধিনায়ক চাইবেন টস জিততে। এমনটাও দেখা যেতে পারে যে দুর্বল দলের কাছে শক্তিশালী দল হেরে গেল। তার একমাত্র কারণ শিশির। এই সময় দুবাইয়ের মাঠে এত শিশির পড়ে যে বোলারদের কিছু করার থাকে না।” দু’জনের কথাতেই প্রমাণ, খেলার আগে টসেই ম্যাচের ফয়সালা হয়ে যেতে পারে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতীয় দলে স্পিনারদের আধিক্য ছিল। মাত্র এক জন বিশেষজ্ঞ পেসারে খেলেছিল ভারত। তাতে ম্যাচ জিততে কোনও সমস্যা হয়নি। পিচ এত মন্থর হয়ে গিয়েছিল যে ২৫০ রান করাও কঠিন মনে হচ্ছিল। কিন্তু এশিয়া কাপে তা হবে না। সেখানে স্পিনারদের থেকেও পেসারেরা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে টস। সেই সতর্কবার্তা গম্ভীরদের দিলেন টনি ও রবিন।