পাকিস্তানের সেনাপ্রধান তথা ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির দাবি করলেন, তাঁর দেশ সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চায়। কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব চায় না। তবে সীমান্তে সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে তারা কঠোর নীতি অবলম্বন করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল ইসলামাবাদ। মুনিরের দাবি, সীমান্তসন্ত্রাস সহ্য করা হবে না। আফগানিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলছিলেন মুনির। পরোক্ষে কি ভারতকেও বার্তা দিয়ে রাখলেন? অনেকে তেমনটাই মনে করছেন।
বৃহস্পতিবার পেশোয়ারে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুনির। তালিবানশাসিত আফগানিস্তানের সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালীন সীমান্তবর্তী এলাকায় আদিবাসীরা পাক সেনাকে যে সহযোগিতা করেছে, তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সংঘর্ষে যাঁরা শহিদ হয়েছেন, তাঁদের প্রতিও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। মুনির বলেন, ‘‘আফগানিস্তান-সহ সকল প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই শান্তি চায় পাকিস্তান। কিন্তু আফগানিস্তানের মাটি থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে সীমান্তসন্ত্রাস চালানো হচ্ছে, তা সহ্য করা হবে না।’’
মুনিরের দাবি, সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের পরেও আফগানিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিল পাকিস্তান। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির চেষ্টা করা হয়েছিল। একাধিক বার ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়েছে ইসলামাবাদ। কিন্তু সন্ত্রাস বন্ধ করার বিষয়ে কাবুল উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। এ ক্ষেত্রে আবার ভারতকে টেনে আনেন মুনির। দাবি, ভারতের মদতে সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালায় কিছু গোষ্ঠী। তাদের বাধা না দিয়ে উল্টে সহযোগিতা করছে তালিবান সরকার।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (পাকিস্তানি তালিবান) বা টিটিপি। এই গোষ্ঠীই সীমান্তবর্তী এলাকায় অধিকাংশ সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের নেপথ্যে থাকে বলে দাবি। পাকিস্তান দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করে আসছে, ভারত এই গোষ্ঠীকে মদত দেয়। আফগানিস্তান সরকারের বিরুদ্ধেও এই ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে বহু বার। নয়াদিল্লি এবং কাবুল এই দাবি অস্বীকার করেছে। বক্তব্যের সপক্ষে কোনও প্রমাণও দেখাতে পারেনি ইসলামাবাদ।
পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান সম্প্রতি প্রাণঘাতী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। আপাতত দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি চলছে। সেই সঙ্গে স্থায়ী শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে চলছে বৈঠক। দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে মতানৈক্যে দ্বিতীয় দফার শান্তি-আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে। ইস্তানবুলে ফের আলোচনায় বসতে চলেছেন তাঁরা। তার মাঝেই সীমান্তসন্ত্রাস নিয়ে বার্তা দিলেন পাক সেনাপ্রধান।

