Pahalgam Terror Attack: ভারতের ‘জলবোমা’য় ভয়ংকর অবস্থা ওয়াঘার ওপারে! উপগ্রহচিত্র যে হাড়হিম ছবি দেখাচ্ছে তাতে…

যুদ্ধ-যুদ্ধ ভাব বাতাসে? অনেকটা তেমনই পরিস্থিতি। কাশ্মীরের পহেলগাঁও-কাণ্ডের (Pahalgam Terror Attack) পরেই ভারত-পাকিস্তান দু’দেশের মধ্যে টেনশন (India-Pakistan Terror) তুঙ্গে। আর সেই টেনশনই বহুগুণ বাড়িয়ে দিল একটি উপগ্রহচিত্র। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে, পাকিস্তানে খরা! পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে পাক-মদতপুষ্ট জঙ্গিহানায় ২৬ জন ভারতীয়ের মৃত্যুর পরে ভারত এই প্রথমবার সিন্ধু জল চুক্তি (Indus Waters Treaty) রদ করল।

উরিতে পাকিস্তান-মদতপুষ্ট জঙ্গি হামলা

২০১৬ সালে উরিতে পাকিস্তান-মদতপুষ্ট জঙ্গি হামলায় ১৮ জন ভারতীয় সেনা মারা গিয়েছিলেন। সেই ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খুব তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেছিলেন, ‘রক্ত ও জল একসঙ্গে বইতে পারে না।’ বোঝাই গিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী তখন সিন্ধু জলচুক্তির কথা উল্লেখ করছিলেন। এই চুক্তিকে তখন ভারতের দিক থেকে পাকিস্তানের প্রতি অত্যন্ত ‘উদার’ এক ব্যবস্থা হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন মোদী। এবং তখনই এই চুক্তির পুনর্বিবেচনার হুমকি সত্ত্বেও ভারত যে এখনও এটি মেনে চলছে, সে-কথাও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। কেননা, ভারত ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটলেও এই চুক্তি কখনও  রদ করা হয়নি।

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পাক-মদতপুষ্ট জঙ্গিহানায় ২৬ জন ভারতীয়ের মৃত্যুর পরেই এর প্রতিক্রিয়ায় একেবারে প্রথম ধাপে ভারত যে কয়টি পদক্ষেপ করে তার মধ্যে একটি এই সিন্ধু জলচুক্তি রদ। এবং এই প্রথমবারের মতো সিন্ধু জল চুক্তি রদ করল ভারত। পাকিস্তান ‘আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস’ বন্ধ না-করা পর্যন্ত ভারত এই চুক্তি ‘বন্ধ’ রাখবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। 

কিন্তু এর ফলে পাকিস্তানে ঠিক কী কী হতে পারে? ঠিক কতটা জলের অভাবে ভুগতে পারে পাকিস্তান? এ নিয়ে নানা মহলেই একটা প্রশ্ন ছিল। তবে তার আগে জানতে হবে, কী এই সিন্ধু জল চুক্তি?

কী এই সিন্ধু জল চুক্তি?

সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল অভিন্ন নদীগুলির জলপ্রবাহ থেকে পাকিস্তান যাতে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করা। দেশভাগের পরে এই চুক্তিতে ঠিক হয়েছিল, পশ্চিমের তিন নদী– সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগা এবং পূর্বাঞ্চলের তিন নদী– বিপাশা, ইরাবতী ও শতদ্রুর প্রবাহিত জল দুই দেশের মধ্যে ভাগাভাগি হবে। চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু উপত্যকার এই ছয় নদীর মোট ৭০ শতাংশ জল পাবে পাকিস্তান, ৩০ শতাংশ ভারত।
পশ্চিমের তিন নদীর উপর বাঁধ দিয়ে খুব সামান্য পরিমাণ জলই ভারত নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু, চুক্তি স্থগিতের কারণে সেখান থেকে জলপ্রবাহ এখন আর পাকিস্তানে যাবে না। যদিও অন্যান্য শাখা নদীর প্রবাহে কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না। তবে, ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে ওই তিন নদীর জল দিয়ে পাকিস্তানের দুটি প্রদেশে পানীয় ও সেচের যে-প্রয়োজন মেটানো হত, তা এই গ্রীষ্মে ব্যাহত হতে পারে আশঙ্কা করা হয়েছিল। এবং সেই আশঙ্কাই সত্য হল।

পাকিস্তানের কী ক্ষতি?

পাকিস্তানের কৃষিজমিতে যে জল সরবারহ করা হয়, তার প্রায় ৯০ শতাংশই সিন্ধুর। করাচি, মুলতান, লাহোরের মতো বড় শহরগুলিতেও সিন্ধুর জলই ব্যবহার করা হয়। জল না পেলে পাকিস্তানের কৃষিকাজ ও জলসেচ প্রকল্পের উপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। পাকিস্তানের জিডিপির ২৫ শতাংশ নির্ভর করে গম, চাল, আখ, তুলো উৎপাদনের উপর। জলের অভাবে চাষের ক্ষতি হলে তার প্রভাব পড়বে জিডিপির উপরেও। এবং ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির উপরও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.