বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতার একটি হাসপাতালকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। এর আগে হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চও। আদালতের পর্যবেক্ষণ, রোগীকে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যে কোনও হাসপাতালের কর্তব্য। ওই হাসপাতাল তা করেনি। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে বুধবার এই মামলার শুনানি হয়েছে। অবিলম্বে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।
২০২০ সালের ঘটনা। বেলঘরিয়ার যুবক শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরিবারের দাবি, তাঁর অক্সিজেন প্রয়োজন ছিল। কিন্তু যুবক করোনা আক্রান্ত সন্দেহ করে তাঁর চিকিৎসা করা হয়নি। বিনা চিকিৎসায় তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছিল। অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে ২০২০ সালের ১০ জুলাই যুবকের মৃত্যু হয়। এর পরেই ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে মৃতের পরিবার।
বেলঘরিয়ার যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক (রেগুলেটরি) কমিশনে অভিযোগ জমা পড়েছিল। কমিশন অভিযুক্ত হাসপাতালকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। সিঙ্গল বেঞ্চ ক্ষতিপূরণের নির্দেশই বহাল রাখে। সেই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করল না উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ।
মৃত যুবকের মা জানিয়েছেন, আদালতের রায়ে তিনি খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘আদালত আমাদের অভিযোগ মান্যতা দিয়েছে। হাসপাতাল অমানবিক আচরণ করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ চাই। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। আপাতত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার যে নির্দেশ আদালত দিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমি আমার সন্তানকে হারিয়েছি। ওই ক্ষতিপূরণের টাকা অসহায় কাউকে দিয়ে সাহায্য করব।’’