ওড়িশার কলিঙ্গ শিল্পপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেপালি ছাত্রীর মৃত্যু রহস্য এখনও অধরা। অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করে তদন্ত এগোচ্ছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের কর্মী-সহ ১০ জনের বয়ান সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। নেপালি তরুণীর মোবাইল এবং ল্যাপটপে থাকা বিষয়বস্তুও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের পর তাঁর দেহ ইতিমধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে পরিবারের কাছে। তবে সুরতহাল কিংবা ময়নাতদন্তে কী তথ্য উঠে এসেছে, তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। এই অবস্থায় ঘটনার নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে নেপাল সরকারও।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হস্টেলের ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল ওই বিদেশি ছাত্রীর দেহ। গত তিন মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার কোনও নেপালি ছাত্রীর মৃত্যু হল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, ভুবনেশ্বর এমসে তিন চিকিৎসকের একটি দল তরুণীর দেহের ময়নাতদন্ত করেছে। গোটা প্রক্রিয়া ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুবনেশ্বরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার প্রকাশচন্দ্র পাল।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকেই উদ্ধার হয়েছিল তৃতীয় বর্ষের এক নেপালি ছাত্রীর দেহ। ওই ঘটনার পরে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল নেপালি পড়ুয়াদের। পরে ওই ঘটনার তদন্তে উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক দফতরে যৌন হেনস্থার অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। তবে ওই অভিযোগ পাওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ করেনি, এমনও জানা গিয়েছিল। এর পর ওই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ফের এক নেপালি ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তিন মাসে পর পর দু’টি এমন ঘটনার পরে পদক্ষেপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বে একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে কমিশন। দশ দিনের মধ্যে ওই কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। নেপালি তরুণীর মৃত্যুর পর মুখ খুলেছে বিদেশ মন্ত্রকও। বিবৃতি দিয়ে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, ভারতে আসা বিদেশি পড়ুয়াদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে।