জাতীয় গেমসে টেবল টেনিসে জোড়া সোনা বাংলার, দাপট ঐহিকা, সুতীর্থা, অনির্বাণদের

টেবল টেনিসে দাপট দেখাল বাংলা। জাতীয় গেমসে দলগত ইভেন্টে সোনা জিতল বাংলার পুরুষ ও মহিলাদের দল। দু’টি ফাইনালেই তারা হারাল মহারাষ্ট্রকে। জাতীয় গেমসে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করলেন ঐহিকা মুখোপাধ্যায়, সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়, অনির্বাণ ঘোষ, সৌরভ সাহারা।

প্রথম ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই রাজ্যের মহিলা দল। ‘বেস্ট অফ থ্রি’ ফরম্যাটে হয়েছে খেলা। অর্থাৎ, যে দল আগে তিনটি ম্যাচ জিতবে সেই দল সোনা জিতবে। প্রতিটি ম্যাচও ছিল ‘বেস্ট অফ থ্রি গেমস’ ফরম্যাটে। অর্থাৎ, যে প্রতিযোগী তিনটি গেম জিতবেন তিনি ম্যাচ জিতবেন।

মহিলাদের প্রথম ম্যাচ ছিল সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় ও স্বস্তিকা ঘোষের মধ্যে। প্রথম গেম জেতেন সুতীর্থা। দ্বিতীয় গেমে ফিরে আসেন স্বস্তিকা। সমতা ফেরান তিনি। তৃতীয় গেম আবার সুতীর্থা জিতে নেন। তবে স্বস্তিকাও ছাড়ার পাত্রী ছিলেন না। চতুর্থ গেম জেতেন তিনি। নির্ণায়ক গেমে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগান বাংলার মেয়ে। পঞ্চম গেম জিতে ম্যাচ জিতে যান সুতীর্থা (১১-৮, ৮-১১, ১৪-১২, ২-১১, ১১-৫)।

দ্বিতীয় ম্যাচে ঐহিকা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নামেন দিয়া চিতালে। মহারাষ্ট্রকে খেলায় ফেরান দিয়া। ঐহিকাকে দাঁড়াতে দেননি তিনি। পর পর তিনটি গেম জিতে ম্যাচ জিতে নেন দিয়া (১২-১০, ১১-৬, ১১-৫)। তৃতীয় ম্যাচ ছিল বাংলার পয়মন্তী বৈশ্য বনাম মহারাষ্ট্রের তানিশা কোটেজার। প্রথম দু’টি গেম জেতেন পয়মন্তী। তৃতীয় গেম জিতে আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তানিশা। কিন্তু চতুর্থ গেমে হারতে হয় তাঁকে। পয়মন্তী (১১-৮, ১১-৭, ৬-১১, ১১-৬) আবার বাংলাকে এগিয়ে দেন।

নিজের প্রথম ম্যাচ হারলেও হাল ছাড়েননি ঐহিকা। চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নামেন তিনি। প্রতিপক্ষ স্বস্তিকা। দিয়ার কাছে হারের জবাব তিনি দেন স্বস্তিকাকে হারিয়ে। পর পর তিনটি গেম জিতে নেন বাংলার এক নম্বর টেবল টেনিস তারকা (১১-৮, ১১-৬, ১৩-১১)। ঐহিকার জয়ের সঙ্গেই ৩-১ ব্যবধানে ফাইনাল জিতে নেয় বাংলার মহিলা দল। ঘরে আসে সোনা।

মহিলাদের ফাইনালের সময় গ্যালারিতে বসে নিজেদের ফাইনালের অপেক্ষা করছিল পুরুষদের দল। ঐহিকা যেখানে শেষ করলেন সেখান থেকে শুরু করলেন অনির্বাণরা। প্রথম ম্যাচে মহারাষ্ট্রের যশ মোদীকে হারান অনির্বাণ। খেলা গড়ায় পাঁচ গেমে। অনির্বাণ প্রথম গেম জিতলেও তার পরের দু’টি গেম জেতেন যশ। দেখে মনে হচ্ছিল এগিয়ে যাবে মহারাষ্ট্র। কিন্তু শেষ দু’টি গেম জিতে ম্যাচ নিজের দখলে আনেন অনির্বাণ (১১-৭, ১০-১২, ৬-১১, ১১-৮, ১১-৪)।

অনির্বাণকে একটু লড়তে হলেও দ্বিতীয় ম্যাচ হাসতে হাসতে জেতেন আকাশ পাল। মহারাষ্ট্রের রেগান আলবাকার্ককে পর পর তিনটি গেমে হারিয়ে দেন তিনি (১১-৫, ১১-৮, ১২-১০)। আকাশের ম্যাচের পর সোনা জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা। বাকি কাজটি করেন সৌরভ সাহা। তিনি হারান চিন্ময় সৌম্যকে। প্রথম দুটি গেম জেতেন সৌরভ। তৃতীয় গেম জিতে শেষ আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন চিন্ময়। কিন্তু চতুর্থ গেমে দাপট দেখান বাংলার খেলোয়াড় (১১-৭, ১১-৮, ৮-১১, ১১-৬)। সৌরভের জয়ের সঙ্গেই আরও একটি সোনা আসে বাংলার ঝুলিতে। এ বারের জাতীয় গেমস প্রমাণ করে দিল যে টেবল টেনিসে এই মুহূর্তে বাংলাই সেরা। বাকিরা ধারেকাছেও নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.