ভোটে ‘উপদ্রুত’ এলাকা হিসাবে পরিচিত নদিয়ার কালীগঞ্জ বিধানসভার মোলান্দিতে বিজয়মিছিলের সময় কি যথেষ্ট পুলিশি নিরাপত্তা ছিল? জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে অশান্তির আগাম খবর ছিল কি? ভোটগণনার পরে কালীগঞ্জে বোমা বিস্ফোরণে তামান্না খাতুনের মৃত্যুর ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপারের কাছে এই সকল জবাব তলব করল জাতীয় মহিলা কমিশন। কমিশনের সদস্যা অর্চনা মজুমদার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলেছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার মৃত কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব থেকে জেলার বাম এবং বিজেপি নেতৃত্ব। সন্ধ্যায় ময়নাতদন্তের পর মৃতার শেষকৃত্য হবে বলে পরিবার সূত্রে খবর। জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে অর্চনা বলেন, “যে মায়ের কোল খালি হল, তিনি জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ খোয়ালেন। এই দোষ কার? শুধু একটি ভোটের জয় উদ্যাপনের জন্য একটি প্রাণ চলে গেল!” পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে অর্চনার সংযোজন, “এটা পুলিশ দেখবে না কেন? নিশ্চয়ই ওদের গাফিলতি রয়েছে। আমি এসপিকে প্রশ্ন করেছি। ওঁকে উত্তর দিতে হবে।’’
কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারও পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ একটি নির্দিষ্ট দলের ইচ্ছায় পরিচালিত হচ্ছে। পুলিশের সর্বাত্মক ভূমিকা না থাকলে দুষ্কৃতীদের দমন করা সম্ভব নয়। এই ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে শাস্তি দিতে হবে।’’ জেলা বিজেপি-র সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল সরকার সংখ্যালঘুদের শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্ক এবং লেঠেল হিসাবে ব্যবহার করে। একটি শিশুর প্রাণ কেড়ে নেওয়ার মতো পৈশাচিক কাজ করেও কী ভাবে অভিযুক্তেরা পার পেয়ে যেতে পারে, সেটাই অবাক করার মতো বিষয়।’’ উল্লেখ্য, ন’বছরের বালিকার মৃত্যুতে এ পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তামান্নার পরিবার সূত্রে খবর, ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকেলে তার দেহ পৌঁছেছে বাড়িতে। স্থানীয় ইদগাহ ময়দানে শিশুটির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। নতুন করে যাতে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি না হয় সে জন্য এলাকায় পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক আধিকারিক।