মাঝরাতে ভিডিয়ো কলে নগ্ন মহিলা! প্রতারণার ফাঁদে দিল্লির চিকিৎসক, পুলিশের জালে দুই

মধ্যরাতে ফোনের আওয়াজে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় চিকিৎসকের। ভিডিয়ো কল ধরার পর দেখেন ফোনের অন্য প্রান্তে রয়েছেন এক অচেনা মহিলা। কোনও রোগী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন বলে কথা বলতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই চমকে যান তিনি। আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায় ওই মহিলাকে। রেকর্ড করা সেই ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে ছ়ড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে প্রায় ন’লক্ষ টাকা লুটের অভিযোগ। ঘটনাটি দিল্লির ৭১ বছর বয়সি এক চিকিৎসকের সঙ্গে ঘটেছে। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে রাজস্থান থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। অভিযুক্তদের নাম যথাক্রমে আবদুল রহমান এবং তাঁর ভাই আমির খান।

পুলিশ সূত্রে খবর, মাঝরাতে ফোন আসায় সেই ফোন ধরেন দিল্লির ওই প্রৌঢ় চিকিৎসক। অভিযোগ, আপত্তিকর অবস্থায় মহিলার ভিডিয়ো দেখানোর পর চিকিৎসককে হুমকি দিয়েছিলেন অভিযুক্তেরা। টাকা না দিলে রেকর্ড করা ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন বলে ভয়ও দেখানো হয় চিকিৎসককে। চিকিৎসকের দাবি, চাপে পড়ে ৮.৬ লক্ষ টাকা অভিযুক্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন তিনি। তার পরেও বার বার তাঁকে ফোন করে হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্তেরা। আরও টাকা পাঠানোর দাবি জানিয়ে ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখাতে থাকেন চিকিৎসককে। শেষ পর্যন্ত দিল্লি পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই চিকিৎসক।

অভিযোগ দায়ের করার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তে নেমে পড়ে পুলিশ। যে নম্বরগুলি থেকে ফোন করা হয়েছিল তা ট্র্যাক করে জানা যায় রাজস্থান থেকে এই ফোনগুলি করা হয়েছে। রাজস্থানে পৌঁছে তল্লাশি চালিয়ে আবদুল এবং আমির নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আবদুল এবং আমির দু’জনেই সম্পর্কে ভাই। রাজস্থানের দীগ জেলার মেওয়াত এলাকার বাসিন্দা তাঁরা। ৩৯ বছর বয়সি আবদুল স্ত্রী এবং তিন সন্তান-সহ সেখানেই থাকেন। তাঁদের সঙ্গে থাকেন ২৬ বছর বয়সি আমির। পুলিশ সূত্রে খবর, গত সপ্তাহে তাঁদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দু’জনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। বাড়ির ভিতর থেকে সাতটি ফোন এবং ভিডিয়ো রেকর্ড করার একটি যন্ত্র বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, দিল্লির চিকিৎসক শুধু একাই নন, আরও ২৫ জন ব্যক্তিকে ভয় দেখিয়ে প্রচুর পরিমাণে টাকা আদায় করেছেন অভিযুক্তেরা। হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে সেই টাকা জমা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে আবদুল এবং আমিরের সঙ্গে আরও কয়েক জন যুক্ত রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চার জন দিল্লির বাসিন্দা। বাকিরা বিহার, গুজরাত, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছেন। তাঁদের গ্রেফতারির জন্য তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। আপাতত পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন দুই অভিযুক্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.