বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল বিহার থেকে। সেই বিহারেরই এক সমবায় সমিতির উদ্বোধনে এ বার তার জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মা প্রয়াত হীরাবেন মোদীর উদ্দেশে কুকথার প্রসঙ্গে কংগ্রেস এবং আরজেডিকে একহাতও নিলেন।
বিহারে ভোটার তালিকার নিবিড় এবং বিশেষ সংশোধনের প্রতিবাদে ভোটাধিকার যাত্রায় নেমেছিলেন রাহুল গান্ধী। বিহারের দ্বারভাঙায় ওই কর্মসূচি চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীর মায়ের উদ্দেশে কুকথা ভেসে আসে। মঙ্গলবার বিহারে এক সমবায় সমিতির ভার্চুয়াল উদ্বোধনে সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরেন মোদী। মৃত মায়ের নামে কুকথা বলার অভিযোগে সরাসরি নিশানা করলেন কংগ্রেস এবং আরজেডিকে। তিনি বলেন, “আমার মা আমাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন যাতে আমি আপনাদের মতো কোটি কোটি মায়ের সেবা করতে পারি। আপনারা সকলেই জানেন, আমার মা আর জীবিত নেই। ১০০ বছর পূর্ণ করে তিনি আমাদের সকলকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমার মা, যিনি আর জীবিত নেই, যাঁর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই, আরজেডি-কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে তাঁকে কুকথা বলা হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “মা আমাদের কাছে পৃথিবীতুল্য। মা আমাদের আত্মসম্মান। কিছুদিন আগে এই বিহারে যা ঘটেছে, তা আমি কল্পনাও করতে পারি না। আরজেডি-কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে আমার মাকে কুকথা বলা হয়েছে। এই কুকথা শুধুমাত্র আমার মায়ের অপমান নয়। এটি দেশের সকল মা, বোন এবং মেয়ের অপমান। আমি জানি, ওই কথাগুলি শুনে বিহারের প্রতিটি মায়ের কতটা খারাপ লেগেছে। আমি জানি, আমার মনে যে যন্ত্রণা হচ্ছে, বিহারবাসীও সেই একই যন্ত্রণায় ভুগছেন।”
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার যে সমবায় সমিতির উদ্বোধন করেন মোদী, সেটির মূল লক্ষ্য বিহারের মহিলাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন। ভার্চুয়াল ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যে বিহারবাসীরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন মহিলা। তাঁদের সামনেই এ বার নিজের মায়ের উদ্দেশে কুকথা বলার অভিযোগে কংগ্রেস এবং আরজেডিকে একহাত নিলেন মোদী। প্রয়াত হীরাবেন কী ভাবে কষ্ট করে তাঁদের বড় করেছেন সে কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
মোদী বলেন, “আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়তেন, তা-ও কাজ করে যেতেন। তিনি একটা একটা করে পয়সা জমিয়ে আমাদের জামাকাপড় বানিয়ে দিতেন। আমাদের দেশে কোটি কোটি মা আছেন। যে কোনও দেবদেবীর থেকে মায়ের স্থান উঁচুতে।” এর পরেই কারও নাম না-করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রাজার ঘরে জন্ম নেওয়া রাজপুত্রেরা একজন দরিদ্র মায়ের এবং তাঁর ছেলের সংগ্রাম বুঝতে পারবেন না। তাঁরা সোনা-রুপোর চামচ হাতে নিয়ে জন্মেছেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে বিহারের ক্ষমতা তাঁদের পরিবারের হাতে রয়েছে। কিন্তু আপনারা এক দরিদ্র মায়ের ছেলেকে প্রধানমন্ত্রী করেছেন। এটা তাঁরা হজম করতে পারছেন না।”