আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র (আইএসএস)-এ পৌঁছে গিয়েছেন শুভাংশু শুক্ল এবং তাঁর তিন সঙ্গী। মাধ্যাকর্ষণ-শূন্য পরিবেশে কেমন লাগছে, তা নিজেই জানালেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন। তিনি জানিয়েছেন,তাঁর মাথা ঝিমঝিম করছে। তবে আগামী ১৪ দিন আইএসএস-এ বসে যে গবেষণা তাঁরা করবেন, তার তুলনায় এই অস্বস্তি কিছুই নয়। এই প্রথম আইএসএস-এ পা রাখলেন কোনও ভারতীয়।
২৮ ঘণ্টা পরে বৃহস্পতিবার আইএসএস-এ পৌঁছেছেন শুভাংশু, তাঁর তিনি সঙ্গী পোল্যান্ডের স্লায়োস উজ়নানস্কি-উইসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবর কাপু, আমেরিকার পেগি হুইটসন। তাঁদের অপেক্ষায় বসেছিলেন আইএসএস-এর সাত মহাকাশচারী। পৃথিবী থেকে রওনা হওয়া চার মহাকাশচারীকে নিয়ে তাঁদের উদ্বেগও ছিল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ (ভারতীয় সময়) শুভাংশুরা আইএসএস-এ পৌঁছোতেই তাঁদের জড়িয়ে ধরেন সেখানকার মহাকাশচারীরা। তাঁরা সেখানে ইতিমধ্যেই গবেষণা চালাচ্ছেন। চার জনকে অভ্যর্থনা জানিয়ে পানীয় দেওয়া হয় হাতে। সেই মুহূর্তের কিছু ছবি, ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়েছে সমাজমাধ্যমে। প্রকাশ করেছে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্স। সেখানে দেখা গিয়েছে, আইএসএস-এ হাসতে হাসতে গল্প করছেন মহাকাশচারীরা।
আইএসএস-এ বসেই লখনউয়ের ছেলে শুভাংশু বলেন, ‘‘মাথাটা ঝিমঝিম করছে। কিন্তু আগামী ১৪ দিন আমরা এখানে যা করব, তার তুলনায় এই বিষয়টা কিছুই নয়। এটা গর্ব এবং উত্তেজনার মুহূর্ত, মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে আমাদের ব়ড় পদক্ষেপ।’’ সেই সঙ্গে তিনি আবার মনে করিয়ে দেন তাঁর কাঁধে থাকা ভারতীয় পতাকার কথা। তাঁর কথায়, ‘‘গর্বের সঙ্গে কাঁধে তিরঙ্গা পরেছি।’’ বুধবার যাত্রা শুরুর আগেও এই কথাই শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কাঁধে লাগানো তিরঙ্গা মনে করাচ্ছে যে তিনি একা নন। রাকেশ শর্মার অভিযানের প্রায় চার দশক পরে মহাকাশে কোনও ভারতীয় পাড়ি দিয়েছেন। শুভাংশুর অভিযানের লাইভ সম্প্রচার লখনউয়ে তাঁর স্কুলে বসে দেখেন বাবা, মা, আত্মীয়, বন্ধুরা।
ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার বেলা ১২টা ১ মিনিট নাগাদ আমেরিকার ফ্লরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ফ্যালকন ৯ রকেটে চেপে মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন শুভাংশুরা। শুভাংশুদের অভিযানের নাম ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’। নাসার সম্মতিতে মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের ড্রাগন যানে চেপে তাঁরা আইএসএস-এ পৌঁছেছেন। প্রতি ঘণ্টায় ২৬,৫০০ কিলোমিটার গতি ছিল মহাকাশযানের। ১৪ দিনের এই অভিযানের গোটা সময়টা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনেই থাকবেন চার নভশ্চর। সেখানে অন্তত ৬০টি পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন তাঁরা।