বদলা মোহনবাগানের, জামশেদপুরকে ২-০ গোলে হারিয়ে আইএসএল কাপের ফাইনালে সবুজ-মেরুন

লক্ষ্য ছিল একটাই। আক্রমণ, আক্রমণ এবং আক্রমণ।

সোমবার যুবভারতীতে শুরু থেকেই হোসে মোলিনার মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এই মন্ত্রেই খেলে গেল। উপায়ও ছিল না। আইএসএল সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ১-২ পিছিয়ে থাকায় সোমবার মোহনবাগানকে জিততেই হত। অন্তত এক গোলের ব্যবধানে। তার বেশি হলে সরাসরি ফাইনালে ওঠার সুযোগ না হলে টাইব্রেকার। তাই আক্রমণ করা ছাড়া আর কোনও পথ ছিল না জেমি ম্যাকলারেনদের কাছে। তার ফল প্রথম পর্বে ১-২ গোলে পিছিয়ে থেকেও দ্বিতীয় পর্বে ২-০ গোলে জিতে মোহনবাগান পৌঁছে গেল আইএসএল কাপের ফাইনালে।

ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে আক্রমণ শুরু করলেও মোহনবাগানকে গোল পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হল ৫১ মিনিট পর্যন্ত। জেসন কামিংস ১৬তম মিনিটে গোল করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে গোলমুখী শট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তেকাঠির মধ্যে রাখতে পারেননি। বল বারের অনেকটা উপর দিয়ে চলে যায়। পরের মিনিটে আরও এক বার সুযোগ চলে আসে কামিংসের কাছে। এ বারেও বাইরে মারেন তিনি। ওই সময় একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে মোহনবাগান। কিন্তু কখনও সেই শট বাঁচান জামশেদপুরের গোলরক্ষক অ্যালবিনো গোমেস, কখনও আবার গোল লাইন থেকে সেই বল বাঁচান দলের রক্ষণভাগের ফুটবলারেরা।

মোহনবাগান গোটা ম্যাচ জুড়ে আক্রমণ করে গেল। সেই সঙ্গে নষ্ট করল একের পর এক গোলের সুযোগ। ২-০ গোলে জিতলেও প্রথমার্ধে মোহনবাগান বহু বার গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেও ব্যর্থ হয়। যত না সেটা জামশেদপুরের সাফল্য, তার চেয়েও বেশি মোহনবাগানের ব্যর্থতা। যে দল আইএসএল লিগ জিতেছে দাপটের সঙ্গে, সেই দলের থেকে এত গোলের সুযোগ নষ্ট মেনে নেওয়া কঠিন।

দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গোল করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল জামশেদপুর। কিন্তু জ়াভি হার্নান্ডেজ়ের শট একটুর জন্য বাইরে চলে যায়। বিশাল কাইত শরীর ছুড়েও বলের নাগাল পাননি। ৫১ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল পায় মোহনবাগান। কামিংস পেনাল্টি থেকে গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। বক্সের মধ্যে বল হাতে লাগিয়েছিলেন প্রণয় হালদার। যে কারণে পেনাল্টি পেয়ে যায় মোহনবাগান। সেখান থেকে গোল করতে ভুল করেননি কামিংস।

কামিংসের সেই গোল যদিও মোহনবাগানের ফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত করতে পারেনি। সেটা করলেন আপুইয়া। ৯৪ মিনিটের মাথায় গোল করেন তিনি। ম্যাচ যখন অতিরিক্ত সময়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল, সেই সময় গোল করে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেন মোহনবাগানের মিজ়ো ফুটবলারটি। বক্সের বেশ খানিকটা বাইরে থেকে বাঁক খাওয়ানো শটে বল জালে জড়িয়ে দেন আপুইয়া। সেই সঙ্গে গোটা যুবভারতী জুড়ে শুরু হয়ে যায় উৎসব। বাজি, আবির এবং চিৎকারের ভরে যায় সবুজ-মেরুন গ্যালারি। জামশেদপুর থেকে আঘাত নিয়ে ফিরেছিলেন সমর্থকেরা। যুবভারতীতে সেই সব দুঃখ, কষ্ট ভুলিয়ে দিলেন আপুইয়ারা।

মোহনবাগান সমর্থকদের জামশেদপুরে মার খেতে হয়েছিল। ম্যাকলারেনরা বলেছিলেন, মাঠেই জবাব দেবেন। দলকে ফাইনালে তুলে সমর্থকদের দুঃখ ভোলাবেন। সেটাই করলেন তাঁরা। আইএসএল লিগ জয়ের পর এ বার কাপ ফাইনালে মোহনবাগান। বিপক্ষে সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরু এফসি। শনিবার মুখোমুখি হবে দুই দল। যে ম্যাচ হতে পারে যুবভারতীতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.