মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘিরে অনিশ্চয়তার আবহে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি করল ভারত এবং ব্রিটেন। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার এই চুক্তি সইয়ের কথা ঘোষণা করেছেন।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার টেলিফোনে মোদী-স্টার্মার আলোচনার পরে চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এই চুক্তি নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে। অন্য দিকে এক্স পোস্টে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘একটি শক্তিশালী এবং নিরাপদ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা, বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তোলা এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাধা হ্রাস করাই আমাদের পরিবর্তিত পরিকল্পনার অংশ।’’
ঘটনাচক্রে, ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের হুঁশিয়ারির আবহে মোদী সরকার আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে এগিয়েছে। একই সঙ্গে আমেরিকায় ভারতীয় পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে বাধা এলে ইউরোপের বাজারে যাতে ভারতীয় পণ্যের রফতানি বাড়ানো যায়, সেই লক্ষ্যে ব্রিটেনের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও দ্রুত নয়াদিল্লি মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলতে চাইছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। গত ২৮ এপ্রিল ব্রিটেন থেকে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা সেরে দিল্লিতে ফিরেছিলেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। এর পর চুক্তির খসড়া নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়। গত শুক্রবার আবার লন্ডনে গিয়ে চুক্তি নিয়ে চূড়ান্ত দফার বৈঠকে বসেন তিনি ও বাণিজ্য মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকেরা।
সরকারি সূত্রের খবর, নতুন মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির ফলে ভারত এ বার ব্রিটেন থেকে আমদানি করা স্কচ হুইস্কি, জাগুয়ার, ল্যান্ডরোভারের মতো দামি গাড়িতে শুল্ক কমাবে। অন্য দিকে ভারত থেকে রফতানি হওয়া পোশাক, জুতোর মতো বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক কমাবে ব্রিটেন। চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে ভারতীয়দের আরও বেশি ভিসা দেওয়া হতে পরে। মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ২০২২-এর গোড়ায় ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু বারবার ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী বদলের ফলে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দরকষাকষিতে বাধা পড়েছিল।