একের পর এক মিস্‌ড কল মোবাইলে, কানে হেডফোন, বান্ধবীর বিয়ে থেকে ফেরা ছাত্রীর দেহ উদ্ধার বড়ঞায়

বান্ধবীর বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে উঠেছিলেন পিসির বাড়িতে। বিয়েবাড়ি থেকে ফেরেন পিসির বাড়িতে। সকালে শোওয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হল ওই তরুণীর ঝুলন্ত দেহ। রবিবার মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানা এলাকার ঘটনা। পরিবারের দাবি, মোবাইলে ভিডিয়ো কল চলাকালীন আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।

মৃতার নাম আজিজা সুলতানা (১৭)। কান্দি পুরসভার মোহনবাগান এলাকায় দাদুর বাড়িতে থাকতেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার পিসির বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধারের সময় তাঁর কানে ছিল হেডফোন। মোবাইলে অনেকগুলো মিস্‌ড কল ছিল বলে দাবি পরিবারের। মৃতার পরিবারের অনুমান, প্রেমে প্রতারিত হয়েই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। ত্রিকোণ প্রেমের জেরে আত্মহত্যা করেছেন আজিজা। এমনটা দাবি করেছেন তাঁর এক সহপাঠী। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, আজিজা একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। এ বছরই আলিম (মাধ্যমিক সমতুল) পরীক্ষায় পাশ করে ফাজিলে (উচ্চ মাধ্যমিক সমতুল) ভর্তি হয়েছিলেন। শনিবার বড়ঞা থানার বধূয়া গ্রামে তাঁর এক বান্ধবীর বিয়ে ছিল। কয়েক দিন আগে বান্ধবী তাঁকে কান্দির বাড়িতে এসে নিমন্ত্রণপত্র দিয়ে গিয়েছিলেন। শনিবার বিয়ের দিন আজিজা বান্ধবীর বাড়িতে পৌঁছেও যান। বান্ধবীর বাড়ির কাছেই তাঁর পিসির বাড়ি। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় তিনি পিসির বাড়িতে যান। পিসির সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথাবার্তা বলে এক তলার একটি ঘরে ঘুমোতে গিয়েছিলেন। ভোরে পরিবারের দুই সদস্য ঘুম থেকে উঠে দেখেন, আজিজা যে ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তার দরজা খোলা। ঘরের সামনে গিয়ে চমকে ওঠেন দু’জনেই। দেখেন, ওড়নায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছেন আজিজা।

আত্মঘাতী ছাত্রীর এক সহপাঠী বলেন, ‘‘বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল আজিজা। সেখানে ওর প্রেমিকও উপস্থিত ছিল। কিন্তু অন্য আর এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমিকের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেটা মেনে নিতে না পেরে বাড়িতে গিয়ে অশান্তি করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ও।’’

মৃতার কাকা সাহাদ আলি শেখ বলেন, ‘‘বান্ধবীর বিয়েতে আজিজা বেশ হাসিখুশিই ছিল। ওখানে কারও সঙ্গে কোনও ঝামেলা হয়নি ওর। কিন্তু রাতে কী হল, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। তবে, ওর মোবাইলে অনেকগুলো মিস্‌ড কল ছিল। আমাদের অনুমান, সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরেই ও আত্মঘাতী হয়েছে। কেউ হয়তো ওকে ঠকিয়েছে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.