জেনেরিক নামেই লিখতে হবে ওষুধ, অন্যথায় কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি

জেনেরিক নামে ওষুধ লিখতে হবে প্রেসক্রিপশনে। এই নিয়ম না মানলে কড়া পদক্ষেপের
হুঁশিয়ারি দিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)। এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, বার বার বলার পরেও অধিকাংশ অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক এই নিয়ম মেনে প্রেসক্রিপশন লিখছেন না। তাই এ বার থেকে জেনেরিক নামে ওষুধ না লিখলে সংশ্লিষ্ট
চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন সাময়িক ভাবে সাসপেন্ড করা হবে। যদিও এনএমসি-র এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন।

ব্র্যান্ড ছেড়ে জেনেরিক নামে ওষুধ লেখার কথা বহু দিন ধরেই বলে আসছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কিছু চিকিৎসক সেই নিয়ম মেনে চললেও, অধিকাংশই এখনও ব্র্যান্ড-নির্ভর প্রেসক্রিপশন লেখেন বলে অভিযোগ। সেই অভ্যাসেরই বদল চাইছে এনএমসি। কারণ, জেনেরিক নামের ওষুধ কিনতে ৬০-৭০ শতাংশ খরচ কম হয়। তাতে চিকিৎসায় ওষুধের খরচ নিয়ে মানুষের ভোগান্তি কমবে। যদিও চিকিৎসকদের বড় অংশের মতে, প্রেসক্রিপশনে তাঁদের ব্র্যান্ডের নাম লিখতে নিষেধ করা হলেও তাতে প্রকারান্তরে সুবিধা পাবেন ওষুধের দোকানিরা। কারণ, তাঁরা জেনেরিক নামের প্রেসক্রিপশন দেখে, নিজেদের পছন্দমতো ব্র্যান্ডের ওষুধই বিক্রি করবেন। তাতেও আখেরে রোগীর ক্ষতি হবে। চিকিৎসকদের উপরে শাস্তির খাঁড়া ঝুলিয়ে এই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা হলেও ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া আধিপত্যকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে— সেই প্রশ্ন তুলছেন ডাক্তারদের একাংশ।

জেনেরিক নামে ওষুধ লেখার পক্ষে দীর্ঘ দিন ধরেই রয়েছে শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ। তার পক্ষে চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ বলেন, ‘‘আমাদের ১১টি ক্লিনিকেই জেনেরিক নামে ওষুধ লেখা হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তা করলেও দোকানিরা তাঁদের নিজের পছন্দ মতো ব্র্যান্ডের ওষুধই বিক্রি করেন। এতে ব্যবসায়ীর মুনাফা হয়।’’ চিকিৎসক মহলের দাবি, ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে ‘ব্র্যান্ড নেম’-সহ ওষুধ তৈরি বন্ধ করতে হবে। তবেই জেনেরিক নামের ওষুধ লেখা প্রেসক্রিপশন কাজে আসবে।

চিকিৎসকদের বৃহত্তম সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সর্বভারতীয় সভাপতি শরদ আগরওয়াল বলেন, ‘‘ওঁরা পরামর্শ দিয়েছেন বলে শুনেছি। কিন্তু যদি তা বাধ্যতামূলক করা হয়, তা হলে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ করব। মনে রাখতে হবে, কোন ব্র্যান্ডের ওষুধ বেশি ভাল কাজ করবে, সেটা এক জন চিকিৎসকই সব থেকে ভাল বোঝেন।’’ আর ‘ব্র্যান্ড নেম’-এর ওষুধ লেখা বন্ধ করা হলে প্রতিটি সংস্থার তৈরি ওষুধের গুণমানও যাতে এক থাকে, সে বিষয়টিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককেই নিশ্চিত করতে হবে বলে দাবি শরদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.