ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মতো বিশাল দুর্নীতি: সিবিআই ।। তা হলে তো ভাঙতেই হবে: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করেছিলেন ওসামা বিন লাদেন। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতিও একটি ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার’ ভেঙে ফেলার কথা বললেন। তবে সেটি আমেরিকার নয়। খাস বাংলার। সিবিআইয়ের কথা মতো, সেটি আদতে ‘বাংলার নিয়োগ দুর্নীতির খতিয়ান’। যা অতীতের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মতোই সুবিশাল এবং সুউচ্চ! ঘটনাচক্রে সেই দুর্নীতির খতিয়ান আগামী ১১ সেপ্টেম্বর তাঁর এজলাসে হাজির করতে বলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ২২ বছর আগে যে দিন ধ্বংস হয়ে মাটিতে মিশেছিল ১১০ তলা উঁচু ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। যা আমেরিকার ইতিহাসে কালো দিন হিসাবে চিহ্নিত।

মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে চলছিল নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি। সেখানে হাজির ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। যে সিবিআইকে নিয়োগ মামলার একের পর এক তদন্তভার দিয়েছিলেন বিচারপতি। মঙ্গলবারও তেমনই একটি মামলায় ২০১৪ সালের টেটের ওএমআর শিটের তথ্য জানতে চান বিচারপতি। এ ব্যাপারে মুখ বন্ধ খামে যাবতীয় তথ্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩টের মধ্যে পেশ করতে বলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তারই প্রেক্ষিতে সিবিআই আর বিচারপতির কথোপকথনে হঠাৎ উঠে আসে আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার (বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র)-এর জোড়া ইমারতের প্রসঙ্গ।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার বিশ্ব বাণিজ্যিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল লস্কর ই তৈবা। ফাইল জমা দেওয়ার তারিখ প্রসঙ্গেই সম্ভবত তার উল্লেখ করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। বিচারপতিকে সিবিআইয়ের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সমান বিশাল দুর্নীতির খতিয়ান নিয়ে আমরা ১১ ই সেপ্টেম্বর এজলাসে এসে হাজির হব হুজুর।’’ জবাবে বিচারপতিও পাল্টা মন্তব্য করেন, ‘‘দুর্নীতি যদি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সমান হয়, তা হলে তাে সেটা অবিলম্বে ভেঙে ফেলা দরকার।’’

তবে সিবিআইয়ের সঙ্গে বিচারপতির কথোপকথন এর বেশি এগোয়নি। যদিও বিচারপতির মন্তব্যের পর আগামী সোমবারের শুনানি নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

উল্লেখ্য মঙ্গলবারই নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছে সিবিআই। কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত সেই মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ এবং তার পরবর্তী কালে বিচারপতি অমৃতা সিংহের নির্দেশকে মনে করিয়ে দিয়ে তারা বলেছে, ‘‘যেখানে বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত চলছে, সেখানে নিম্ন আদালতের নির্দেশে আবার কলকাতা পুলিশ কুন্তলের চিঠি মামলায় হস্তক্ষেপ করছে কেন?’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.