মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরকাশীতে এখনও নিখোঁজ অনেকে, ভারী বৃষ্টির জেরে থমকে গেল উদ্ধারকাজ

ভারী বৃষ্টির জেরে উত্তরকাশীতে থমকে গেল উদ্ধারকাজ। মঙ্গলবার দুপুরের মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানে ১০০০-এরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ। ধুয়েমুছে যাওয়া গ্রামের ধ্বংসস্তূপের তলায়, কাদামাটি-পাথরের স্তূপের নীচে এখনও চাপা পড়ে রয়েছেন অনেকে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তাঁদের খোঁজ করছে উদ্ধারকারী দলগুলি।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভারী বৃষ্টির জেরে রবিবার উত্তরকাশীর ধরালী গ্রামে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর (আইএমডি) জানিয়েছে, গোটা উত্তরকাশী জেলা জুড়েই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা ও রাতের দিকে বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েকটি এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। তা ছাড়া, দিনভর বৃষ্টিতে শুকনো মাটিও কাদায় পরিণত হয়েছে। ফলে হাঁটাচলায় বেশ বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারী দলগুলিকে। তবে কাজের গতি কমলেও ষষ্ঠ দিনেও ত্রাণ এবং উদ্ধার অভিযান থামেনি বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর। এখনও পর্যন্ত ১.৪ টনেরও বেশি খাবার ও ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই আরও খাবার ও ত্রাণ পাঠানো হবে।

আপাতত গোটা এলাকা থেকে আটকে পড়া পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভারতীয় সেনা, রাজ্য সরকার এবং বিভিন্ন উদ্ধারকারী সংস্থা এক যোগে কাজ করে চলেছে। ভারতীয় সেনার বিবৃতি অনুযায়ী, সেনাবাহিনী এবং অসামরিক বিমান পরিবহণ দলের তত্ত্বাবধানে এখনও পর্যন্ত মোট ৩৩টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ১৯৫ জন স্থানীয়কে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, ২০০ জন পর্যটককেও ধস-কবলিত এলাকা থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী নিশ্চিত করেছেন, এখনও পর্যন্ত ১,০০০-এরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের সকলকে চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। উদ্ধারকাজের সুবিধার জন্য উত্তরকাশী এবং হর্ষিলের মধ্যে আকাশপথে একটি করিডোরও তৈরি করা হয়েছে। ধরালীতে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে সড়কপথে পরিবহণ ফের চালু করার চেষ্টা চলছে। তবে এতে এখনও বেশ কিছুটা সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। গাংনানির ও পারের পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা পুরোপুরি ধুয়েমুছে গিয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কপ্টার ওঠানামাতেও বিলম্ব হচ্ছে। ফলে দেরি হচ্ছে ত্রাণকার্যেও। দুর্যোগের পর মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী ঘোষণা করেছেন, যাঁরা গৃহহীন হয়েছেন, তাঁদের পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। মৃতদের পরিবারগুলির জন্যও একই পরিমাণ ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.