Malbazar: বর্ষবরণের আলোর নীচেই বিষাদের ছায়া! বন্ধ হল সোনালি চা-বাগান…

 বর্ষবরণের প্রাক্কালে বিষাদের ছায়া ডুয়ার্সে। বন্ধ হয়ে গেল মালবাজার ব্লকের বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সোনালি চা-বাগান। প্রশাসন ও শ্রম দফতরের কাছে সেখানে কর্মবিরতির বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার ই-মেল’ও চলে এসেছে। তার পরেই বিষয়টি জানাজানি হয়। বাগানে যদিও এই মর্মে কোনও নোটিস সেখানকার শ্রমিকেরা এদিন খুঁজে পাননি। তবে পুজোর সময় থেকেই বাগানটিতে অচলাবস্থা চলছিল। এদিন তা অফিসিয়ালি বন্ধ করার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ল। তবে এতে শ্রমিকদের দুর্দশার মাত্রা যে আরও বাড়ল, তা নিয়ে কোনও তরফেই কোনও সংশয় নেই বলে জানাল সংশ্লিষ্ট মহল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা শুরু হয়েছে।

মাল ব্লকের সোনালি চা-বাগানে শ্রমিকসংখ্যা ৩৫৮ জন। শ্রমিকদের অভিযোগ, কাজ করিয়েও তাঁদের মজুরি দেওয়া হচ্ছিল না দীর্ঘদিন ধরে। এর আগে বোনাস ইস্যুকে কেন্দ্র করে ১৯ অক্টোবর সেখানে একবার কর্মবিরতির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। যদিও শ্রম দফতরের তৎপরতায় ২০ অক্টোবরই শিলিগুড়ির দাগাপুরে উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের দফতরে বসে সেই জট খোলে। বৈঠকের চুক্তি মোতাবেক ১৯ শতাংশে হারের বোনাসের মধ্যে ১১ শতাংশ বাগান খোলার সময়ই মিটিয়ে দেওয়া হয়। পুজোর বকেয়া বোনাসের ৮ শতাংশ ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে দেওয়া হবে এমন সিদ্ধান্তই তখন গৃহীত হয়েছিল। যদিও শ্রমিকরা জানাচ্ছেন, সেই মোতাবেক কিছুই ঘটেনি। ফলে শ্রমিকেরা কাজে যেতে অনীহা প্রকাশ করছেন।

সূত্রের খবর, মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দোষারোপ করে। মালিকপক্ষের বক্তব্য, শ্রমিকদের কাজকর্মে তীব্র অনীহা, পরিচালকদের কথা না শোনা, নিয়ম শৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি, গত ১১ ডিসেম্বর থেকে কাজে আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলির উপর আলোকপাত করে এতে বাগানের যে তীব্র আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তা বলা হয়েছে।

সোনালি চা-বাগানের শ্রমিক সুমিত্রা ওঁরাও, হেলারিস টিগ্গা বলেন, বাগান বন্ধ করে চলে গিয়েছেন বাগান কর্তৃপক্ষ। বাকি রয়েছে বোনাস, মজুরি। এখন আমাদের সংসার চালাতে সমস্যা হচ্ছে। নতুন বছরের আগেও আমাদের চা-বাগানে বিষাদের সুর। আমরা চাই আমাদের পাওনাকড়ি মিটিয়ে বাগানটি খোলা হোক।

বাগানেরই বাসিন্দা ও তৃণমূল চা-বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বাবুলাল ওরাওঁ বলেন, শীতের শুখা মরসুম এলেই বাগান বন্ধ করে দেওয়া এখন মালিকদের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সোনালিকে বন্ধ করে দেওয়া হল। তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.