অলিম্পিক্সে ইতিহাস লক্ষ্য সেনের, প্রথম ভারতীয় পুরুষ হিসাবে ব্যাডমিন্টনের সেমিফাইনালে

প্যারিস অলিম্পিক্সে আরও একটি পদকের সামনে ভারত। শুক্রবার ব্যাডমিন্টনের সেমিফাইনালে উঠলেন লক্ষ্য সেন। কোয়ার্টার ফাইনালে চিনা তাইপেইয়ের চৌ তিয়েন চেনকে ১৯-২১, ২১-১৫, ২১-১২ গেমে হারালেন তিনি। সেমিফাইনালে জিতলেই রুপো নিশ্চিত হবে। হারলেও ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচে নামবেন লক্ষ্য। প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড় হিসাবে অলিম্পিক্সের সেমিফাইনালে উঠলেন তিনি।

দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে প্রথম থেকেই লড়াই হচ্ছিল সমানে সমানে। তবে শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিলেন চৌ। ২-৪ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় এগিয়ে যান ৭-৬ পয়েন্টে। আবার চৌ এগিয়ে যান। বিরতিতে ১১-৯ এগিয়েছিলেন। একের পর এক স্ম্যাশের কোনও উত্তর ছিল না লক্ষ্যের কাছে। পাশাপাশি তাঁর গতি সমস্যায় ফেলছিল লক্ষ্যকে। তবু ভারতের খেলোয়াড় যথাসম্ভব লড়াই করার চেষ্টা করছিলেন। ১১-১৫ পিছিয়ে থাকা থেকে ১৫-১৫ করে ফেলেন। সেই সময় পাশ থেকে কোচ প্রকাশ পাড়ুকোন চেঁচিয়ে বলতে থাকেন, “ওকে সমস্যায় ফেলো। লম্বা র‌্যালি হলেও চিন্তা কোরো না।” সে কথা শোনেন লক্ষ্য। চৌ-এর একের পর এক স্ম্যাশের প্রায় প্রতিটিই ফেরত দিতে থাকেন। দুর্দান্ত রক্ষণ দেখা যায় ভারতের ব্যাডমিন্টন তারকার ব্যাটে। তবে শেষ দিকে মুহূর্তের ভুলে হেরে যান গেম।

দ্বিতীয় গেমের আগে প্রকাশ শান্ত করার চেষ্টা করেন ছাত্রকে। বলেন, “জাজমেন্ট করো। বাইরে যাবেই। শান্ত থাকো। তাড়াহুড়ো কোরো না।” প্রথম গেমেই মতোই শুরু হয় দ্বিতীয় গেমও। দুই খেলোয়াড়ের কেউই কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিচ্ছিলেন না। কোচের কথা মেনেই খেলা একটু ধীরে করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। লম্বা র‌্যালি করতে থাকেন। এক সময় গেম পকেটে পুরে নেন।

তৃতীয় সেটে চৌ-কে শুরু থেকেই কোণঠাসা করতে শুরু করেন লক্ষ্য। একটা সময় ৮-৪ পয়েন্টে এগিয়ে যান। অতীতে চৌ-এর বিরুদ্ধে যে তিন বার তৃতীয় সেটে ম্যাচ গড়িয়েছে, প্রতিটিতেই হেরেছিলেন লক্ষ্য। আসল মঞ্চেই দেখা যায় ভারতীয় খেলোয়াড়ের দাপট। বিপক্ষকে কোনও সুযোগ নিয়ে গেম ২১-১২ পয়েন্টে পকেটস্থ করেন।

লক্ষ্যকে সাহায্য করেছে পোর্ত দে লা শ্যাপেলের সমর্থকেরাও। প্রচুর ভারতীয় সমর্থক হাজির হয়েছিল ম্যাচ দেখতে। লক্ষ্যের গোটা লড়াইয়েই তাঁরা চিৎকার করে গেলেন ‘জিতেগা ভাই জিতেগা, ইন্ডিয়া জিতেগা’ বলে। সেই সমর্থনের দাম দিলেন লক্ষ্যও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.