চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ভিড় তখন উপচে পড়ছে। স্টেডিয়ামে যে দর্শক ধরে তার থেকে অনেক বেশি লোক ঢুকে পড়েছেন মাঠে। স্টেডিয়ামের বাইরে তার থেকেও বেশি ভিড় তখনও দাঁড়িয়ে। ঢোকার চেষ্টা করছে তারা। বিরাট কোহলিরা স্টেডিয়ামে ঢোকার আগেই বিশৃঙ্খলা হয় চিন্নাস্বামীর বাইরে। পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন ৩৩ জন। তার পরেও অনুষ্ঠান হল চিন্নাস্বামীতে। সেখানে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানালেন কোহলি। কিন্তু তাঁর মুখে বাইরের পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা নিয়ে কিছু শোনা গেল না। তাঁরা কি আদৌ বাইরের খবর জানতেন?
স্টেডিয়ামে যাওয়ার আগে বিধান সৌধে গিয়েছিলেন কোহলিরা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া তাঁদের সম্মানিত করেন। যদিও বৃষ্টির কারণে সেই অনুষ্ঠান কাটছাঁট করতে হয়। তার পরে সরাসরি তাঁদের দেখা যায় স্টেডিয়ামের ভিতরে। মাঠে নেমে সকলের আগে মাইক্রোফোন হাতে নেন কোহলি। দর্শকদের চিৎকারে তিনি প্রথম কয়েক মিনিট কথাই শুরু করতে পারেননি। পরে সঞ্চালক সকলকে একটু শান্ত হতে অনুরোধ করেন।
শুরুতেই কোহলি জানিয়ে দেন, তাঁরা তাড়াতাড়ি এই অনুষ্ঠান শেষ করবেন। তিনি বলেন, “আমাদের সময় বেশি নেই। তাড়াতাড়ি সব শেষ করতে হবে। ট্রফি নিয়ে মাঠ ঘোরা হবে। শুরুতে বলতে চাই, এই বছর কাপ জিতব স্লোগান বদলে এই বছর কাপ জিতেছি হয়ে গিয়েছে। আমরা পেরেছি। এই জয় শুধু ক্রিকেটারদের নয়, সমর্থকদেরও। ১৮ বছর ধরে সব উত্থান-পতনের পরেও সকলে পাশে থেকেছেন।”
কোহলি জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরুর সমর্থকদের থেকে ভাল সমর্থক তিনি কোথাও দেখেননি। তিনি বলেন, “আমি জীবনে কোনও দলের এ রকম সমর্থক দেখিনি। সকলকে অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।” তার পরেই দলের অধিনায়ক রজত পাটীদারকে ডেকে নেন তিনি। ট্রফি হাতে মাঠে নামেন পাটীদার। কোহলি আর কিছু বলেননি।
বেঙ্গালুরুর এই উৎসব নিয়ে তখন রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সমাজমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে উল্লাস হল? মানবিকতা কোথায় গেল? কিন্তু আদৌ কোহলিরা কি বাইরের দুর্ঘটনার খবর জানতেন। চিন্নাস্বামীর বাইরে দাঁড়িয়ে কয়েক জন দর্শক জানিয়েছেন, তাঁরাই দুর্ঘটনার খবর জানতেন না। কারণ, সেটা ঘটেছে অন্য গেটে। যেখানে বিশৃঙ্খলা হয়েছে সেই গেট দিয়ে নিশ্চয় কোহলিরা স্টেডিয়ামে ঢোকেননি। আর তখন স্টেডিয়ামের ভিতরেও ৪০-৪৫ হাজার দর্শক। বাইরের খবর সেখানে পৌঁছোলে ভিতরেও হুড়োহুড়ি হতে পারত। হয়তো ভিতরের দর্শকেরাই জানতেন না বাইরে কী হয়েছে। সেই কারণেই হয়তো কোহলিদের মুখে দুর্ঘটনার কোনও কথা শোনা যায়নি।