বিরাট কোহলি টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার আগে কথা বলেছিলেন রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে। প্রাক্তন ভারতীয় প্রধান কোচ ফাঁস করলেন। গোটা ক্রিকেটবিশ্ব আলোড়িত করে ১২ মে টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন বিরাট। জুনে ইংল্যান্ড সিরিজ়ের ঠিক আগে এ ভাবে বিরাটের অবসর নেওয়ার ঘোষণায় অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সকলেই।
ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সফল কোচ-অধিনায়কের জুটি শাস্ত্রী-কোহলির। সেই প্রাক্তন কোচ আইসিসিকে বলেন অবসর ঘোষণা করার আগে বিরাটের সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছিল। ‘‘সপ্তাহ খানেক আগে (অবসর নেওয়ার) বিরাটের সঙ্গে কথা হয়। ওর কোনও আক্ষেপ ছিল না। দু’একটা প্রশ্ন আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম বিরাটকে। ও আমাকে জানায় অবসর নেওয়া নিয়ে মনে কোনও দ্বিধা নেই। তাতে আমার মনে হয়েছিল, ‘এটাই ঠিক সময়।’ ওর মন শরীরকে জানিয়ে দিয়েছিল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় হয়ে গেছে।’’
ভারতের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে কোহলির সাফল্য সবচেয়ে বেশি। ৬৮ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ৪০টি জেতেন। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেয়ে ১৩টি বেশি। খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর আগ্রাসন গোটা দুনিয়ায় পরিচিত। ‘‘যদি বিরাট কিছু করার সিদ্ধান্ত নেয় তা হলে ১০০ শতাংশ উজাড় করে দেবে। যেটা সহজ কথা নয়। তা সে এক জন বোলার হিসেবে হোক বা ব্যাটসম্যান হিসেবে,’’ বলেছেন শাস্ত্রী। যোগ করেছেন, ‘‘এক জন ক্রিকেটার নিজের কাজ করেই ক্ষান্ত থাকে। কিন্তু মাঠে দল নামার পরে কোহলিকে দেখে মনে হয় যেন ওকেই সব উইকেট নিতে হবে, ওকেই সব ক্যাচ নিতে হবে, সব সিদ্ধান্তও নিতে হবে ওকেই। সবকিছুতে এতটা নিজেকে জড়িয়ে ফেলার একটা ধকলও আছে, যদি ও বিশ্রাম না নেয়। কোন ধরনের ক্রিকেট কতটা খেলবে সেটা ঠিক না করতে পারলে শরীরে তাঁর প্রভাব পড়বেই।’’
একই সঙ্গে শাস্ত্রী আরও মনে করেন কোহলি যে ভাবে সবসময় প্রচারের আলোয় থাকেন, মাঠে নামলেই তাঁর উপরে যে রকম প্রত্যাশার চাপ থাকে, তার ভূমিকাও কম নয় ধকল পড়ার ক্ষেত্রে। ‘‘গোটা বিশ্বে ওর ভক্ত ছড়িয়ে আছে। গত এক দশকে ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও। তা সে অস্ট্রেলিয়া হোক, দক্ষিণ আফ্রিকা হোক, মানুষ কোহলিকে দেখার জন্য মাঠে আসেন,’’ বলেন শাস্ত্রী।
তবে শাস্ত্রী এটাও মেনে নিয়েছেন, সব কিছুর পরেও তিনি কোহলির সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে গিয়েছেন। ‘‘বিরাট আমায় অবাক করে দিয়েছে। আমি ভেবেছিলাম এখনও ২-৩ বছর টেস্ট ক্রিকেট খেলে যেতে পারত ও। কিন্তু মানসিক ভাবে প্রভাব পড়ার জন্যই হয়তো ফিটনেসের দিক থেকে সক্ষম থাকার পরেও মন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা শরীরকে জানিয়ে দিয়েছিল।’’