লরিকে ধাক্কা মেরে উল্টে গেল যাত্রিবাহী বাস, বর্ধমানে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিহারের ১০ জন বাসিন্দার

রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরিকে পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা মেরে উল্টে গেল একটি যাত্রিবাহী বাস। শুক্রবার সাতসকালে পূর্ব বর্ধমানের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০ জনের। আহত আরও অনেকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে দুর্গাপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি বাস। পূর্ব বর্ধমানের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের নলা ফেরিঘাটের কাছে বাসটি আচমকাই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ১২ চাকার লরিকে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষের পর রাস্তার উপর উল্টে যায় যাত্রীবোঝাই বাসটি। ঘটনাটি নজরে আসতে প্রথমে স্থানীয়েরাই উদ্ধারকাজে হাত লাগান। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকেরা। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ওই বাসযাত্রীদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে ১০ জনকে মৃত ঘোষণা করেছেন। বাকি ৩৫ জনের চিকিৎসা চলছে। তবে তাঁদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক আয়েশা রানি এ।

জানা গিয়েছে, বাসযাত্রীরা সকলেই বিহারের মতিয়ার থানা চিরাইয়া সারসওয়া ঘাট এলাকার বাসিন্দা। গঙ্গাসাগরে স্নান সেরে তারকেশ্বর হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথেই দুর্ঘটনা। ৪৫ জন পুণ্যার্থীর মধ্যে পাঁচ জন শিশুও ছিল। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বাসটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল, না কি গতি বেশি ছিল, সে সব বিষয় খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ নিজাম দুর্ঘটনার জন্য ওই লরিকেই দায়ী করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নির্দিষ্ট পার্কিংয়ে না দাঁড়িয়ে এ রকম রাস্তার ধারে লরি দাঁড় করিয়ে রাখে প্রায় প্রতি দিনই। এর জন্য দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগেও এমন দুর্ঘটনা ঘটলেও পুলিশ-প্রশাসন কার্যত কিছুই করছে না।এটা দেখা পুলিশের দায়িত্ব।’’ তবে অন্য এক স্থানীয় বাসিন্দা অশোক হাজরার দাবি, ‘‘ওই বাসের চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সেই কারণেই দুর্ঘটনা।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.