ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে আমেরিকার হামলার পরেই তেলের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেই আবহেই সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘সকলকে’ তেলের দাম নিয়ে সতর্ক করলেন!
সোমবার নিজের ট্রুথ সোশ্যালে তেলের দাম নিয়ে পর পর দু’টি পোস্ট করেন ট্রাম্প। প্রথম পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘সকলে তেলের দাম কম রাখুন। আমি কিন্তু নজর রাখছি।’’ তার পরেই ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি, ‘‘তোমরা শত্রুর হাত ধরে খেলছ। এটা করো না।’’ এই পোস্টে তিনি কাদের নিশানা করেছে, তা স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প। তবে দ্বিতীয় পোস্টে তিনি সরাসরি আমেরিকার জ্বালানি বিভাগকে সম্বোধন করেছেন। মার্কিন জ্বালানি বিভাগকে এই বিষয়ে (তেলের দাম কমানো) কাজ করার কথা বলেন ট্রাম্প। তাঁর প্রত্যুত্তরে জ্বালানি বিভাগের সচিব ক্রিস রাইট জানান, তাঁরাও বিষয়টির উপর নজর রেখেছেন!
তেল এবং গ্যাস খনন কী ভাবে বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়ে কাজ করে মার্কিন জ্বালানি বিভাগ। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা কী ভাবে খনন বৃদ্ধি করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। জো বাইডেনের শাসনকালে এই খনন বৃদ্ধি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। ট্রাম্প চান, তাঁর এই জমানায় তেল এবং গ্যাস খনন আরও বেশি হবে!
সোমবার বিশ্বব্যাপী বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট তেলের দাম গত পাঁচ মাসে সর্বোচ্চ হয়। তবে পরে তা এক শতাংশের বেশি কমে ব্যারল প্রতি ৭৬.১ ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে। রবিবার ইরানে মার্কিন হামলার পরেও পশ্চিম এশিয়া থেকে তেল এবং গ্যাস পরিবহণ অব্যাহত ছিল। তবে অদূর ভবিষ্যতে সেই ছবি পাল্টাতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিন পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালানোর মধ্যে দিয়েই রবিবার আমেরিকা সরাসরি ইরান-ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। মার্কিন হামলায় ইরানের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এই আবহে প্রত্যাঘাত হিসাবে ইরান কী কী করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে বিশ্ব জুড়ে। সম্ভাব্য পদক্ষেপ হিসাবে ইরান হরমুজ় প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে। তেমন এক ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছে তেহরান। উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইরানের মধ্যে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার চওড়া হরমুজ় প্রণালী বিশ্ব জুড়ে ‘তেলের করিডর’ হিসেবে পরিচিত। সারা পৃথিবীর মোট জ্বালানি তেলের ২০ শতাংশ এই জলপথের মাধ্যমে পশ্চিম এশিয়া থেকে বহির্বিশ্বে রফতানি করা হয়। সেই হরমুজ় প্রণালীতে ইরান জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিলে, বিশ্ব তেলের বাজারে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশই আসন্ন এই আশঙ্কা থেকে কী ভাবে উদ্ধার পাওয়া যায়, তার পথ খুঁজতে ব্যস্ত। এই আবহেই ট্রাম্প তেলের দাম নিয়ে সতর্ক করলেন।