Kaushiki Amavasya, Tarapeeth, কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে প্রস্তুতি তারাপীঠে

আগামীকাল ২২ আগস্ট কৌশিকি অমাবস্যা। কথিত আছে এই কৌশিকী আমাবস্যার রাতে তারাপীঠের মহাশ্মশানে সাধনা করে মা তারার দর্শন পেয়েছিলেন সাধক বামদেব। সেই উপলক্ষে প্রতিবছর এই দিনটিতে কয়েক লক্ষ পূর্ন্যার্থীর ভিড় হয় তারাপীঠে। তারই প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে।

সিদ্ধপীঠ তারাপীঠ। তারাপীঠে মা তারার মন্দিরের পাশেই দ্বারকা নদীর পাড়ে রয়েছে তারাপীঠ মহাশ্মশান। তারাপীঠের এই মহাশ্মশানের পঞ্চমুন্ডির আসনে বসে সপ্তঋষি বশিষ্ট মুনি তপস্যা করে মা তারার দর্শন পেয়েছিলেন। তারপর কৌশিকী অমাবস্যার তিথিতেই এই শ্মশানের শ্বেতশিমূল বৃক্ষের নীচে সাধনা করে মা তারার দর্শন পেয়ে সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামদেবও। সেই সময় থেকেই মহাসমারোহে কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হয়ে আসছে তারাপীঠে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই কৌশিকী অমাবস্যার তিথিতে তারাপীঠের মহাশ্মশানে তন্ত্রসাধনা করতে আসেন বহু তন্ত্রসাধক। মহাশ্মশানে জ্বলে ওঠে হাজারে হাজারে হোমকুণ্ড। মা তারার দর্শন পেতে এবং সাধনায় সিদ্ধিলাভ করার আশায় তারাপীঠে এসে ভিড় জমান তন্ত্রসাধক থেকে সাধারণ পূর্ন্যার্থীরাও।

এবছর ২২ আগস্ট শুক্রবার বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে কৌশিকী অমাবস্যার তিথি শুরু হচ্ছে। অমাবস্যায় তিথি চলবে পরের দিন অর্থাৎ ২৩ আগস্ট শনিবার বেলা ১১টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত। মন্দির কমিটির আশা, এবছর প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষেরও বেশি পূর্ন্যার্থী তারাপীঠ মন্দিরে আসবেন। সেই উপলক্ষে সেজে উঠছে তারাপীঠ।
তারাপীঠে আসা পূণ্যার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে মা তারার পুজো দিতে পারেন তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করেছে বীরভূম জেলা পুলিশ ও তারাপীঠ মন্দির কমিটি। তারাপীঠ মন্দিরের প্রবেশ পথগুলিতে বসানো হচ্ছে মেটাল ডিটেক্টর গেট। তারাপীঠ মন্দির ও তারাপীঠ মন্দির এলাকাজুড়ে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের জন্য তৈরী করা হচ্ছে অস্থায়ী বাঁশের ব্যারিকেড। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে ১৭৫ জন বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা এড়াতে রাজ্য পুলিশের ৩০০ আধিকারীক সহ ১০০০ জন পুলিশ কর্মী এবং ১৭০০ সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হচ্ছে। থাকবে মহিলা ও সাদা পোশাকের পুলিশ।

তারাপীঠ এলাকাজুড়ে ২০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুলিশের নজরদারির জন্য ১০টি অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার তৈরী করা হয়েছে। যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য ৩৭টি ড্রপগেট করা হয়েছে। আজ বিকেল চারটের পর তারাপীঠে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। রামপুরহাট-তারাপীঠ রাস্তার আটলা মোড় পর্যন্ত সমস্ত যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সেখান থেকে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হবে চাকপাড়ার দিকে।

অন্যদিকে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে রামপুরহাটের মুনসুবা মোড়, চাকপাড়া মোড়, মল্লারপুরের আম্বা মোড়, বাহিনা মোড় তারাপীঠ থানার বেসিক মোড়ে কার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তারাপীঠের হোটেল ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। আবাসিকদের কাছ থেকে যাতে অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া না নেওয়া হয় তার জন্য হোটেল ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি তারাপীঠের অলিতে গলিতে যাতে দমকল বাহিনীর গাড়ি যাতায়াত করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ ও জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগ থেকে পানীয় জলের পাউচ বিতরণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.